নারী ফুটবলারদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাফুফের সভাপতি তাবিথ আউয়ালসহ একাধিক ব্যক্তি। পরশু রাতে বাফুফে ভবনে গিয়ে ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলে বুঝানোর চেষ্টা করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। খেলোয়াড়দের সূত্রে জানা গেছে, সবার সঙ্গে কথা বলতে রাতে এসেছিলেন সভাপতি। একজন একজন করে কথা বলেছেন। যারা ক্যাম্পের ভেতরে আন্দোলন গড়ে তুলেছেন তারাই মূলত কথা বলেছেন বাফুফের সভাপতির সঙ্গে। রাত ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত একটানা কথা হয়েছে।
খেলোয়াড়দের সূত্র জানায়, প্রেসিডেন্ট স্যার রাতে এসে আমাদেরকে ডেকেছিলেন। তার নিজ রুমে বসেই একজন একজন করে ডেকে কথা বলেন। খেলোয়াড়রা জানিয়েছেন তাদেরকে মোবাইল ফোন নিজ নিজ রুমে রেখে সবাইকে বোর্ড রুমে বসতে বলা হয়। প্রেসিডেন্ট স্যার সবার কথাই শুনেছেন।' মাতসুশিমা সুমাইয়া ছাড়া সবাই ছিলেন।
কোচিং স্টাফ সূত্রে জানা যায়, বাফুফের কাছে খেলোয়াড়রা যেসব যুক্তি তুলে ধরেছেন তার পক্ষে-বিপক্ষে কথাও হয়েছে। কোচের যেসব কথায় খেলোয়াড়দের মনে আঘাত লেগেছে, বাফুফে হতে সে বিষয়টি কঠোর নজরদারিতে রাখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আর কোচের টেকনিক্যাল বিষয়গুলো নিয়ে যেভাবে ভুল ধরা হয়েছে তার পক্ষে যুক্তি দেখাতে পারেননি খেলোয়াড়রা। তারা নিজেদের অভিযোগের পক্ষে যুক্তি টেকাতে পারেননি। খেলোয়াড়রা তাদের ভুল বুঝলেও প্রকাশ করেননি।
সাফে নেপালের বিপক্ষে দল গঠন নিয়েও কথা হয়েছে। খেলোয়াড়রা উত্থাপন করেছেন কোন ম্যাচ কী হয়েছিল। সাফে প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১-০ গোলে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ দল, শেষ মুহূর্তে গোল শোধ করে। সেই ম্যাচে অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ৭০ মিনিটে মাঠ ছাড়ার পর গোল শোধ করেছিল বাংলাদেশ। মাঠে নেমে ছিলেন মনিকা চাকমা (৮৩ মিনিট) ও তহুরা খাতুন (৮০ মিনিট) নেমেছিলেন। সাবিনার পারফরম্যান্স নিয়ে কথা হয়েছে। সাবিনার সহকারী খেলোয়াড়রা জানিয়েছেন সাবিনা একাদশে নামার নিশ্চয়তা চাইছেন। সাবিনা সাফের প্রত্যেক ম্যাচের একাদশে ছিলেন।
কিন্তু ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ ছাড়া সব ম্যাচেই তাকে বসে যেতে হয়েছিল। ৯০ মিনিট খেলার মতো পারফরম্যান্স ছিল না। সাবিনা ধরে নিচ্ছেন তিনি পারফরম্যান্স করতে পারছেন, কিন্তু কোচ মানছেন না। কোচ পরিবর্তন করে অন্য কোনো কোচের হাতে দায়িত্ব দেওয়া হলে সাবিনা পুরো ৯০ মিনিট খেলতে পারবেন কিনা কিংবা ছোটনকে দায়িত্ব দেওয়া হলে সাবিনা ৯০ মিনিট খেলতে পারবেন কিনা, সে প্রসঙ্গে সাবিনা হাস্যকর দুটি আবদার করেছেন ফেডারেশনের কাছে। সঙ্গে জানিয়েছেন তিনি আর দুই বছর জাতীয় দলের অধিনায়ক থাকতে চান। বাফুফে সবার প্রতি নমনীয় মনোভাব দেখিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করেছে দেশের নারী ফুটবলে তাদের অবদানের কথা।
খেলোয়াড়দের মনের আগুন নেভাতে সভাপতি তাবিথ আউয়াল নিজের সব চেষ্টা করেছেন। বাফুফে ধরে নিচ্ছে আজ থেকে খেলোয়াড়রা অনুশীলনে নামতে পারেন। যে নামবেন না সে কি করবেন সেটি এখন আর বাফুফে বিবেচনা করবে না। কে খেলতে চান, আর কে খেলতে চান না, সেটি নিজ নিজ খেলোয়াড়ের হাতে ছেড়ে দিয়েছে বাফুফে।