অর্থের প্রয়োজন সকলেরই। প্রতেক্যটা মানুষ চায় ভালোভাবে থাকতে। তাই বলে গাড়িচালকের সঙ্গে নকল বিয়ে দেখিয়ে আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া ব্যপারটা অত্যন্ত বিস্ময়কর! চীনের সাংহাইতে এমনই এক ঘটনা ঘটেছে। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা চলছে। খবর সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের।
ঘটনার বিস্তারিত সম্পর্কে জানা যায়, ৪০ বছর বয়সী মেং- চীনের সাংহাইতে বসবাস করেন। ২০১৪ সালে তিনি ছোট আকারে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু তার এই ব্যবসা বেশি দিন টিকেনি। এরপরেই তিনি নতুন ফন্দি বের করেন। আত্মীয়দের সঙ্গে প্রতারণা করার ছক করেন। সাজান নকল বিয়ে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বলছে, একদিন রাস্তায় জিয়াং নামে এক গাড়ি চালকের সঙ্গে পরিচিত হন মেং। তাকে তিনি মিথ্যে কথা বলে রাজি করান যে, তার অনেক বয়স হয়েছে তাই তার বাবা মা জোর করে বিয়ে দিতে চায়। এজন্য নকল বিয়ে করতে হবে। এতে রাজি হয়ে যায় ওই গাড়ি চালক।
এরপর মেং তার আত্মীয়দের জানান, জিয়াংয়ের সঙ্গে বড় বড় রিয়েল এস্টেট প্রজেক্টের কাজ আছে এবং সে সস্তায় নতুন বাড়ি কিনে দিতে পারবে। পরবর্তীতে মেং এক লাখ ৩৭ হাজার ডলার মূল্যের একটি ছোট ফ্ল্যাট কিনে তার কাজিনের কাছে অর্ধেক মূল্যে বিক্রি করেন।
মেং তার কাজিনকে বলেন যে তার আত্মীয়র কাছে মিথ্যা বলতে হবে যে সে এই ফ্ল্যাট অর্ধেক দামে পেয়েছে জিয়াং ও তার কারণে।
এরপর মেং তার আত্মীয়দের নিয়ে আবাসন প্রকল্পের শোরুমে যান। মেং আত্মীয়স্বজনদের বলেন, তারা এই ফ্ল্যাট অনেক অল্প দামে পেয়েছেন। প্রতি বর্গমিটারে ৫,০০০ ইউয়ান ছাড় দেওয়া হবে তাদের জন্যে, যার মুল্য বাজারদরের চেয়ে ২০ শতাংশ কম হবে।
মেং এর কথায় রাজি হয়ে যায় কয়েকজন। পাঁচজন মেং এর প্রতারণার শিকার হন। সস্তায় ফ্ল্যাট কেনার জন্য বিপুল অর্থ দিয়েছিলেন তারা।
অনেকে তো বাড়িগাড়ি পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়েছিল। মেং তার আত্মীয়দেরকে বহু বছর ধরেই ঠকিয়ে যাচ্ছিলেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮-২০১৯ সালে মেং তার আত্মীয়দের বোকা বানাতে ফ্ল্যাট ভাড়া করেছিলেন। আত্মীয়দের জানানো হয়েছিল ওই ফ্ল্যাটগুলো তাদের কেনা ফ্ল্যাট। তবে ফ্ল্যাটের কাগজ চাইলে মেং দিতে পারেনি।
এসব সস্তা ফ্ল্যাটের আসল কাগজ হয় না বলে বুঝ দিতে চেয়েছিল। তবে মেং-এর কাজে একজনের সন্দেহ হয়। তাই আসল ফ্ল্যাট মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। তারপরেই মেং হাতেনাতে ধরা পড়ে।
আদালত মেংকে সাড়ে ১২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ ছাড়া নকল স্বামী জিয়াংকেও ছয় বছর এবং আরেকজনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।