সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নবনির্মিত একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে উদ্বোধনের আগেই ফটল ধরার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্কুলটির শিক্ষকরা। ভবনটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯০ লাখ ৭০ হাজার ৪৭৫ টাকা।
তাড়াশে উপর সিলট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনকে কেন্দ্র করে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, ওই স্কুলে নির্মিত হয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন দোতলা ভবন। ভবনজুড়ে করা হয়েছে রং। ভবনের এক পাশে কালো কালিতে লেখা আছে ‘উপর সিলট প্রাথমিক বিদ্যালয়’। বাইরে অনেকটাই দৃষ্টিনন্দনভাবে ভবনটি গড়ে তোলা হলেও ভবনের ভেতরে বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেছে ফাটল। এমনকি ভবনের পিলার, ছাদ, দেয়ালসহ বেশকিছু জায়গায় ফাটল দেখা গেছে।
এসময় সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) বিদ্যালয় ভবনটি নির্মিত হয়েছে। ২০২৪ সালের আগস্টে নবনির্মিত ভবনটি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্থান্তর করার কথা ছিল। তবে বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরার কারণে ভবনটি বুঝে নেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের কারণে ভবনটির বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। নির্মাণকাজ চলাকালেই বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তোলা হয়। তবে তা উপেক্ষা করে কাজ শেষ করে কর্তৃপক্ষ।
নবনির্মিত ভবনে ফাটল ধরার খবরে বিদ্যালয়টির শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মাঝেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। উপর সিলট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির শিশু শিক্ষার্থী সুমাইয়া খাতুন, খাদিজা খাতুন, রিফা খাতুন ও সাকিবুল হাসান বলেন, আমাদের নতুন স্কুল ভেঙে যাচ্ছে। ওই স্কুলের মধ্যে ক্লাস করতে ভয় লাগবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুসাব্বির হোসেন বলেছেন, ভবনে ফাটল দেখা যাওয়ার বিষয়টি প্রধান শিক্ষক আমাদের জানিয়েছেন। এটি লিখিতভাবে উপজেলা শিক্ষা অফিসে জানানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে উপ-সহকারী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম জানান, বিদ্যালয় ভবনটির ঠিকাদারির কাজ পেয়েছেন অলক হাসান নামের এক ব্যক্তি। এ বিষয়ে অলক হাসান ফাটল মেরামতের আশ্বাস দিয়েছেন।
ঠিকাদার অলক হাসান বলেন, নির্মাণ কাজ শেষে আমি ঢাকায় চলে এসেছি। যদি ভবনে ফাটল দেখা যায়, তাহলে তা মেরামত করে দেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুইচিং মং মারমা জানান, নতুন ভবনে ফাটল ধরার বিষয়টি শুনেছি। অভিযোগ খতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।