আজকের দিনে ব্র্যান্ড শুধু ব্যবসাই করে না, বরং এটি সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার অন্যতম শক্তিশালী মাধ্যম। করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (সিএসআর) পালনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে। সমাজে আনতে পারে দৃশ্যমান সব পরিবর্তন। আর এসব উদ্যোগ শুধু লাভের জন্য নয়— বরং মানুষের জীবনমান ও পরিবেশ উন্নত করার ওপর গুরুত্ব দেয়।
বর্তমানে ভোক্তারা শুধু পণ্য বা সেবার মান দেখেই তৃপ্ত হন না। তারা ব্র্যান্ডগুলোর নৈতিকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার দিকেও খেয়াল রাখেন। সিএসআর উদ্যোগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো সামাজিক ন্যায়বিচার, জনস্বাস্থ্য এবং পরিবেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে ভূমিকা রাখতে পারে। আর এসব প্রচেষ্টা প্রমাণ করে শুধু ব্যবসায়িক সফলতার জন্যই একটি প্রতিষ্ঠান কাজ করে না। বরং নৈতিক দায়িত্ব পালনেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর ফলে অন্যরা অনুপ্রাণিত হয় এবং প্রমাণিত হয় একসঙ্গে ভালো কাজ করা এবং সফল হওয়া সম্ভব।
বাংলাদেশে সিএসআর উদ্যোগের একটি দুর্দান্ত উদাহরণ লাইজলের রমজান ক্যাম্পেইন ‘পরিচ্ছন্নতায় পবিত্রতা’। এ বছর তৃতীয়বারের মতো পরিচালিত হচ্ছে এই ক্যাম্পেইনটি। প্রতি বছর রমজান মাসে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড রেকিট বেনকিজারের জনপ্রিয় জীবাণুনাশক ও ক্লিনিং ব্র্যান্ড লাইজল বাংলাদেশের ১০০টি মসজিদ পরিষ্কারের উদ্যোগ নেয়। এ বছর ক্যাম্পেইন শুরু হয় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম থেকে এবং এটি দেশের সাতটি বিভাগে পরিচালিত হচ্ছে।
ক্যাম্পেইনের আওতায় লাইজলের ডেডিকেটেড টিম, স্বেচ্ছাসেবক, ধর্মীয় নেতা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় প্রতি বিভাগে ১০টি করে ও ঢাকা শহরের ৩০টি মসজিদ পরিষ্কার করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে লাইজল প্রমাণ করেছে তারা দেশের বিভিন্ন কমিউনিটিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
রমজান মাসে মসজিদগুলো ইবাদত-বন্দেগীর পাশাপাশি ইফতার ও সেহরিতে মুসল্লিদের পদচারণায় মুখর থাকে। ফলে পরিচ্ছন্নতা হয়ে ওঠে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। লাইজল মসজিদের মতো জনব্যবহৃত স্থানের পরিচ্ছন্নতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে সাহায্য করেছে। যা শুধু মসজিদ পরিচ্ছন্ন রাখছে না, বরং পুরো সমাজে পরিচ্ছন্নতার বার্তা ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে।
এই ক্যাম্পেইনটি বার্তা দেয়, রমজানের প্রকৃত শিক্ষা শুধু বাইরের পরিচ্ছন্নতা নয় - আত্মার পরিশুদ্ধতাও জরুরি। যখন আমরা নিজেকে বিশুদ্ধ রাখার চেষ্টা করি, তখন সমাজ থেকে অপরাধ-অন্যায় কমে যায় এবং আমরা একটি শান্তিপূর্ণ পৃথিবী গড়ে তোলার পথে এগিয়ে যাই।
পরিচ্ছন্নতা ক্যাম্পেইনের পাশাপাশি লাইজল প্রতিটি মসজিদে এক বছরের জন্য ফ্লোর ক্লিনিং সলিউশন প্রদান করছে। এছাড়া রমজান ক্যালেন্ডার বোর্ড এবং স্বাস্থ্যবিধি কিট সরবরাহ করা হচ্ছে ব্র্যান্ডটির পক্ষ থেকে, যাতে রমজানের পরেও এই উদ্যোগের ইতিবাচক প্রভাব বজায় থাকে। এভাবেই তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক কল্যাণে অবদান রাখছে লাইজল।
যখন কোনো ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠান তাদের কমিউনিটিতে বিনিয়োগ করে, তখন তারা ভোক্তাদের সঙ্গে আরও দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলে; সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে এবং আরও সুন্দর পৃথিবী গড়ে তুলতে সাহায্য করে। তাই জনস্বাস্থ্য, পরিচ্ছন্নতা ও টেকসই উন্নয়নের মতো বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে ব্র্যান্ডগুলো নৈতিক দায়িত্ব পালন করতে পারে, যা তাদের সুনাম ও মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে সহায়তা করবে।