রোববার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

‘মব’ তৈরি করে ছিনিয়ে নেয়া আসামি এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৫:০০

বৈষম্য-বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র হত্যাসহ পাঁচটি মামলার আসামি আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম মোস্তফাকে (৫৮) গত ১২ মার্চ রাজধানীর লালমাটিয়া থেকে আটক করে পুলিশ। আটকের পর কতিপয় দুর্বৃত্ত ‘মব ভায়োলেন্স’ সৃষ্টি করে পুলিশের উপর হামলা চালায়। এসময় কয়েকজন পুলিশ আহত হন। পরে দুর্বৃত্তর গোলাম মোস্তফাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে সরকারি কাজে বাধা দান ও আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মোহম্মদপুর থানায় গোলাম মোস্তফাসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে পুলিশ। মামলায় ছিনিয়ে নেয়া আসামি গোলাম মোস্তফার পরিচয় উল্লেখ করা হয়েছে যে তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সদস্য। 

মোহাম্মদপুর থানার ওসি আলী ইফতেখান হাসান বলেন, ছিনিয়ে নেয়া আসামিকে আটক করতে পুলিশের একটি টিম মাঠে কাজ করছে। পুলিশের উপর হামলায় নেতৃত্ব দেয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস হাফিজুর রহমান লিকুর ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত আনিসুর রহমান সোহাগ। ঘটনার দিন গোলাম মোস্তফাকে পুলিশ আটক করে লালমাটিয়ার অ্যাভেরোজ ইন্টারন্যাশনালের সামনে থেকে। আর সোহাগ অ্যাভেরোজের হেড অব স্কুল। ঘটনার সময় মোবাইলে ধারণ করা একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হামলার সামনে ছিল অ্যাভেরোজ ইন্টারন্যাশনালের পোশাকধারী নিরাপত্তা-প্রহরীরা। এসময় নিরাপত্তা-প্রহরীদের সঙ্গে আরও অন্তত ১০ জন অংশ নেয়। তারা ছিলেন বহিরাগত ও স্কুলটির স্টাফ। মুহুর্তের মধ্যেই বহিরাগত, স্কুলটির নিরাপত্তা কর্মী ও কর্মকর্তারা পুলিশকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে ‘মব’ তৈরি করে। তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়ে সরকারি কাজে বাধা প্রদান করে। পাশাপাশি, পুলিশকে টানা হেঁচড়া করে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি মারতে থাকে। এই সময়ে পুলিশের হেফাজত থেকে আসামি পালিয়ে যেতে থাকলে মামলার বাদীসহ সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স তাকে আটক করার চেষ্টা করলে সে সহ অন্যরা কিল-ঘুষি মারতে থাকে। আসামিদের মারপিটের সময়ে গোলাম মোস্তফাকে ছিনিয়ে নিয়ে কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে।

জানতে চাইলে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান বলেন, পলাতক গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশের অন্যান্য সব ইউনিটও চেষ্টা করছে। 

আসামি ছিনিয়ে নেয়া ও পুলিশের ওপর হামলাকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেরাচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, হামলাকারীদের ও ছিনিয়ে নেয়া আসামিকে আমরা খুঁজছি। যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই গ্রেপ্তার করা হবে। 
পুলিশ জানিয়েছে, পলাতক গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে ক্যান্টনমেন্ট থানা (মামলা নং-১৬), রামপুরা থানা (মামলা নং- ১৮/১৯৩), বাড্ডা থানা (মামলা নং- ১৬), মোহাম্মদপুর থানা (মামলা নং- ৬৯(১)২৫), চকবাজার থানা (মামলা নং- ৫৬/২৫), পল্লবী থানায় (মামলা নং- ১৪৬) হত্যা ও হত্যা চেষ্টার মামলা রয়েছে।

পুলিশ আরও জানায়, আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার হোতা আনিসুর রহমান সোহাগও বৈষম্য-বিরোধী আন্দোলনের একাধিক হত্যা মামলার আসামি। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর রাতে পল্টন থানার একটি হত্যা মামলায় এজহারভুক্ত সোহাগকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। পরে জামিন পান তিনি। 

 

ইত্তেফাক/এমএএম