শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

অনুরোধ-নোটিশেও কাজ হয়নি, চার সড়কের কাজ ফেলে লাপাত্তা ঠিকাদার

আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৫, ১৫:২৯

নাটোরের বাগাতিপাড়া পৌরসভার চারটি সড়কের সংস্কার কাজ বন্ধ রেখে ঠিকাদার লাপাত্তা। এতে পথচারী ও যানবাহন চালকদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন সংস্কার কাজ বন্ধ থাকায় খোয়াগুলো সরে গিয়ে সড়কে গর্ত তৈরি হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় শ্যাওলা জমে পিচ্ছিল হয়ে পড়েছে। ফলে ধীর গতিতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের মে মাসে এসব সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করেছিলেন ঠিকাদার। সেই সময় চলাচলের অনুপযোগী সড়কগুলোর পিচ তুলে খোয়া বিছানো হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে সংস্কার কাজগুলো শেষ হওয়ার কথা ছিল তা এখনও শেষ হয় নি। 

স্থানীয়রা জানায়, এক বছর আগে সড়কগুলোর পুরনো পিচ তুলে সেখানে খোয়া বিছানো হয়েছিল, তবে এরপর আর কোনো কাজ হয়নি। ফলে পথচারী ও যানবাহন চালকদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদার আব্দুল মান্নাফ বাগাতিপাড়া উপজেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেন না ।

বাগাতিপাড়া বি.এম কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সামসুন্নাহার সীমা বলেন, সড়কগুলোর সংস্কার শুরু হওয়ায় আমরা আশার আলো দেখেছিলাম। কিন্তু এখন দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের কষ্ট বেড়েছে। দ্রুত কাজ শেষ করার ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

পৌরসভার ৫নম্বর ওয়ার্ডের সোনাপতিল এলাকার বাসিন্দা মজিবর রহমান ও সালাউদ্দীন বলেন, সড়কটির কাজ শেষ না হওয়ায় ধুলোয় নাকাল শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা। তাছাড়া জরুরি রোগীদের হাসপাতালে নেওয়ার ক্ষেত্রেও দুর্ভোগের সীমা থাকে না। 

পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইউসুফ আলী বলেন, ‘‘সড়কের এই দুরবস্থা নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভ আমাকে সহ্য করতে হচ্ছে। বিষয়টি বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোনো সমাধান হচ্ছে না।’’

পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৮২ লাখ টাকা ব্যয়ে চারটি সড়কের মোট ৮২৫ মিটার সড়ক সংস্কারের কাজটি পেয়েছিল স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আব্দুল মান্নাফ। গত বছরের মে মাসে কাজ শুরু হয়ে ওই বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও কাজ এখনো অসম্পূর্ণ।

পৌরসভার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘চুক্তি অনুযায়ী ২০২৪ সালের ২৭ অক্টোবর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারকে বারবার বলা হলেও তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাই চুক্তি বাতিল করে নতুন দরপত্র আহ্বান করার বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।’’

পৌরসভা প্রশাসক সুরাইয়া মমতাজ জানান, ঠিকাদার কাজ শেষ না করেই বেশির ভাগ টাকা তুলে নিয়েছেন। যোগাযোগ করেও তার সঙ্গে সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। নোটিশ দেওয়া হলেও কাজের অগ্রগতি হয়নি। এ ধরনের ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্ত করার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে তিনি জানান।

তবে ঠিকাদার আব্দুল মান্নাফ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় কাজ শুরুর পর হামলা-মামলার কারণে আত্মগোপনে ছিলেন। কিন্তু ঈদের পর তিনি কাজ শেষ করবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।

ইত্তেফাক/এএস/এএইচপি