শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

ভারতের বিতর্কিত ওয়াকফ বিল মামলার শুনানির সম্ভাবনা ১৫ এপ্রিল

আপডেট : ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ২০:৫১

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল ২০২৫-এর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার শুনানি আগামী ১৫ এপ্রিল হতে পারে। গত সপ্তাহে দেশটির পার্লামেন্টের উভয় কক্ষেই বিতর্কিত বিলটি পাস হয়েছিল।

এরপর কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি এবং অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডসহ বেশ কয়েকটি দলের নেতারা আইনটির বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে মামলা করেন। এই আইনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এখন পর্যন্ত দেশটির শীর্ষ আদালতে ১০টিরও বেশি মামলা দাখিল হয়েছে।

গত সোমবার (৭ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং কে ভি বিশ্বনাথনের সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ ওইসব মামলার আবেদন জরুরি শুনানিতে তালিকাভুক্ত করার জন্য বিবেচনা করতে সম্মত হন।

ভারতজুড়ে আইনটি নিয়ে সমালোচনা ছড়িয়ে পড়েছে। মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের মুখপাত্র এসকিউআর ইলিয়াস বলেন, সংশোধনীগুলো ভারতের সংবিধানের ২৫ এবং ২৬ অনুচ্ছেদের অধীনে মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করেছে এবং ওয়াকফ প্রশাসনের ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার সরকারের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এই আইনে মুসলিম সংখ্যালঘুদের তাদের নিজস্ব ধর্মীয় দান ব্যবস্থাপনা থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে।

তবে দেশটির ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার বারবার জোর দিয়ে বলেছে, ওয়াকফ বিলটি জনগণের একটি বিশাল অংশের সঙ্গে পরামর্শ করে তৈরি করা হয়েছে এবং এটি অমুসলিম সংখ্যালঘুদের সমর্থন পেয়েছে। কংগ্রেসের তোষণ রাজনীতির সাহায্যে বিশাল জমি ও সম্পত্তি ওয়াকফ প্রশাসন দখল করেছে বলেও অভিযোগ করে বিজেপি।

নতুন এই আইন-বিরোধী আন্দোলনে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে 'বিশৃঙ্খলা' সৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে পুলিশকে আক্রমণ করে জনতা, কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয় এবং চার পুলিশ সদস্য আহত হন।

ওয়াকফ সম্পত্তি কী এবং মোদি সরকার কী চায়

ইসলামী ঐতিহ্যে, ওয়াকফ হলো সম্প্রদায়ের কল্যাণের জন্য মুসলমানদের প্রদত্ত একটি দাতব্য বা ধর্মীয় দান। এই ধরনের সম্পত্তি বিক্রি বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে না।

মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান এবং এতিমখানার জন্য এগুলো ব্যবহার করা হয় বলে ভারতের ২০ কোটি মুসলমানের কাছে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ।

সম্পত্তিগুলো এখন পর্যন্ত ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইন দ্বারা পরিচালিত হয়, এর অধীনে এগুলো পরিচালনার জন্য রাজ্য-স্তরের বোর্ড রয়েছে। এই বোর্ডগুলোতে রাজ্য সরকারের মনোনীত ব্যক্তি, মুসলিম আইনপ্রণেতা, রাজ্য বার কাউন্সিলের সদস্য, ইসলামী পণ্ডিত এবং ওয়াকফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপকরা থাকেন।

গত আগস্টে বিজেপি সরকার ওয়াকফ আইন সংশোধনের জন্য একটি বিল পেশ করে। তারা বলেছে, বিলের প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো ওয়াকফ প্রশাসনকে আধুনিকীকরণ করবে এবং আইনি ফাঁকফোকর কমাবে।

কিন্তু মুসলিম নেতা এবং বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করছে, এই সংশোধনীগুলো সরকারকে সম্পত্তিগুলোর ওপর আরও নিয়ন্ত্রণ দেবে।

বিলটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি প্যানেলে পাঠানো হয়েছিল। ফেব্রুয়ারিতে প্যানেল কিছু সংশোধনীসহ বিলটি অনুমোদন করে।

ইত্তেফাক/টিএস/এসকে