মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

জনপরিসর নিরাপদ ও শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে কর্মশালা অনুষ্ঠিত

আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ২৩:০৪

নাগরিক ও ডিজিটাল পরিসর সুরক্ষায় সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীরা। রাজধানীতে আয়োজিত “সেইফগার্ডিং ভয়েস: সিভিল ও ডিজিটাল স্পেস শক্তিশালীকরণের কৌশল”শীর্ষক এক কর্মশালায় তারা এই আহ্বান জানান। কর্মশালাটির আয়োজন করে ভয়েসেস ফর ইন্টারঅ্যাকটিভ চয়েস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট (ভয়েস)। 

এই কর্মশালায় সিভিল সোসাইটি, গণমাধ্যম, আইন ও মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন এবং নাগরিক পরিসর শক্তিশালীকরণে একটি জাতীয় কৌশলপত্র পর্যালোচনা করে মতামত প্রদান করেন। কৌশলপত্রটিতে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জেন্ডার ডিসইনফরমেশন বা লিঙ্গভিত্তিক অপতথ্য ছড়ানোর বিষয়ে।

অ্যাকটিভিস্ট ও গবেষক রেজাউর রহমান লেনিন বলেন, “আমাদের সমাজ এখনো নাগরিক পরিসরে লিঙ্গভিত্তিক বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিষয়টিকে যথাযথভাবে গুরুত্ব দিতে পারেনি। এই ফাঁকটি দূর করতে প্রচলিত আইনগুলোকে সংস্কার করতে হবে।”

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল আর্টিকেল ১৯, মিডিয়া রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ, নিজেরা করি, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর নন-প্রফিট ল, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, এঙ্গেজ মিডিয়া, স্পার্ক, সাঙ্গাত এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম।

ভয়েসের ডেপুটি ডিরেক্টর মুশাররাত মাহেরা বলেন, “নাগরিক ও ডিজিটাল পরিসর সংকুচিত হচ্ছে। এই অবস্থায় সিভিল সোসাইটিকে এমন আইন প্রণয়নে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে, যা মানুষের কণ্ঠকে রোধ করে না, বরং অধিকার ও ডিজিটাল মর্যাদাকে সমর্থন করে।”

ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, “গবেষণা, আইন বিশ্লেষণ, অংশগ্রহণকারীদের অভিজ্ঞতা ও সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি এই কৌশলপত্রে দেখানো হয়েছে কীভাবে আইন ব্যবহার করে ভিন্নমত দমন করা হচ্ছে এবং কিভাবে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, ডিজিটাল হয়রানি এবং প্রযুক্তিনির্ভর হুমকি যেমন ‘ডিপফেইক’ ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।”

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তরুণ ও সরকার—সবার সম্মিলিত চেষ্টাতেই নাগরিক ও ডিজিটাল পরিসরকে উন্মুক্ত, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করা সম্ভব। তারা গণতান্ত্রিক পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য সিভিল সোসাইটি ও গণমাধ্যমের মধ্যে সংযোগ বাড়ানো ও জোরদার করার আহ্বান জানান।

আলোচকরা বলেন, অংশগ্রহণকারীদের মতামত এই কৌশলপত্রকে আরও সমৃদ্ধ করবে এবং ভবিষ্যতে মানবাধিকার রক্ষায় প্রয়োজনীয় নীতি, নির্ধারণ ও অ্যাডভোকেসির ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। কর্মশালা সঞ্ছালনা ও বক্তব্য রাখেন আই সি এন এল-র আইনবিষয়ক পরামর্শক শারমিন খান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সাইমুম রেজা তালুকদার ও এঙ্গেজ মিডিয়া থেকে রেজওয়ান ইসলাম।

ইত্তেফাক/এএম