রাঙ্গামাটিতে পাহাড়িদের আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) নেতা লেত্তু চাকমা ওরফে বাইট্টা চাকমার (৫৪) বাড়িতে সশস্ত্র হামলার অভিযোগ উঠেছে। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন লেত্তু চাকমা। এই ঘটনার জন্য জেএসএস সন্তু লার্মা গ্রুপকে দায়ী করেছে ইউপিডিএফ।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাতে ঘটনায় জেএসএস সন্তু লার্মা গ্রুপকে দায়ী করে সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়েছে সংগঠনটি। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার সাপছড়ির যৌথ খামার মইনপাড়া এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
গুলিবিদ্ধ লেত্তু চাকমা ইউপিডিএফের পরিচালক। তিনি সাপছড়ি যৌথ খামার মইনপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
হামলার ঘটনায় রাঙামাটি জেলা ইউপিডিএফের সংগঠক সচল চাকমা সংবাদ মাধ্যমে এক বিবৃতিতে হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জনিয়ে বলেন, আমছড়ির ডেপ্পোছড়ি থেকে দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা যোগে সন্তু গ্রুপের ছয় জনের একটি সশস্ত্র দল যৌথ খামার টিভি মৌন পাড়ায় ইউপিডিএফ সদস্যের বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় তিনি বাড়ির উঠানে অবস্থান করছিলেন। সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসীরা তাকে দেখা মাত্র গুলি করতে থাকে। এতে তিনি কোমরে ও হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। হামলার পর সন্ত্রাসীরা পুনরায় ডেপ্পোছড়ির দিকে পালিয়ে যায়।
বিবৃতিতে তিনি অবিলম্বে ইউপিডিএফ সদস্যের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত সন্তু গ্রুপের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
ইউপিডিএফ নেতাকে গুলি করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) রাঙামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নগেন্দ্র চাকমা।
তিনি বলেন, যে এলাকায় ঘটনা ঘটেছে, সে এলাকায় আমাদের কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম নেই; কোনো কমিটিও নেই। এটা তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল হতে পারে। কারণ পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণের বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে নানা ঝামেলা চলছে।
তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারেননি রাঙামাটির কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সাহেদ উদ্দিন। তিনি বলেন, গুলিতে একজন গুরুতর আহত হওয়ার খবর লোকমুখে শুনেছি। কেউ আমাদের অভিযোগ করেনি।
এর আগে গত ১৬ এপ্রিল পার্বত্য অঞ্চলে বিজু ও বৈশাখি উৎসব শেষে খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রামে ফেরার পথে খাগড়াছড়ির গিরিফুল এলাকা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থী অপহৃত হন। অপহরণের ঘটনায় আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফকে দায়ী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে জনসংহতি সমিতির ছাত্র সংগঠন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)।
এর মধ্যে বৃহস্পতিবার দুপুরে এক বিবৃতিতে পিসিপি বলে, অপহরণকারীরা কয়েক দফায় পাঁচ শিক্ষার্থীকে মুক্তি দিয়েছে। তাদের এ বিবৃতির কয়েক ঘণ্টা পরেই নিজেদের এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হওয়ার অভিযোগ তুলল ইউপিডিএফ।