ভারত শাসিত কাশ্মিরের পেহেলগামে গত মঙ্গলবার ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ২৬ জনের মধ্যে ছিলেন এক কাশ্মিরি তরুণ। তার নাম সৈয়দ আদিল হুসেন শাহ। এক বন্দুকধারীর কাছ থেকে রাইফেল ছিনিয়ে নিতে গিয়ে নিহত হন আদিল। ৩০ বছর বয়সী এই তরুণ একজন ঘোড়াচালক। তিনি বৈসারানের তৃণভূমিতে আগত পর্যটকদের তার ঘোড়ায় চড়ানোর কাজ করতেন।
আদিলের বাবা হায়দার শাহ বলেছেন, তার ছেলে পর্যটকদের প্রাণ বাঁচাতে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। ছেলেকে নিয়ে তিনি গর্বিত।
গত বুধবার জানাজা শেষে তাকে পেহেলগামের হাপাতনার্ড গ্রামে পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হয়েছে। জানাজায় অংশ নেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ। জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী নিহত আদিল হুসেনের বাবা হায়দার শাহকে জড়িয়ে ধরে সমবেদনা জানান। এ সময় তিনি শোকাহত ও নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এছাড়া শত শত শোকাহত মানুষের সঙ্গে প্রার্থনায় যোগ দেন। এরপরই নিহত আদিল হুসেনের বীরত্বপূর্ণ কাজটি জাতীয় মনোযোগ আকর্ষণ করে।
নিহত আদিলের ভাই সৈয়দ নওশাদ বলেন, আদিল হুসেন কাজ করতে পেহেলগামে গিয়েছিলেন। সেখানে এক বন্দুকধারী তার বুকে তিনবার গুলি করে। তিনি পর্যটকদের ঘোড়ায় চড়িয়ে বৈসারানে নিয়ে যেতেন। মঙ্গলবার বন্দুকধারীরা যখন পর্যটকদের ওপর হামলা চালায়, তখন আমার ভাই ওদের থামানোর চেষ্টা করে। এক পর্যটক, যার বাবা ওই হামলায় নিহত হন, তিনি এসএমএইচএস হাসপাতালে আমাকে আদিলের বীরত্বের কথা জানান।
মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ আদিলের সাহসিকতার প্রশংসা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘তিনি যে পর্যটকদের ঘোড়ায় করে পার্কিং এলাকা থেকে বৈসারান ময়দানে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাদের রক্ষা করতে তিনি নিজের প্রাণ দিয়েছেন। তার শোকাহত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি এবং তাদের পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছি।’
ওমর আবদুল্লাহ আরও লিখেছেন, ‘আদিল ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। তার অসাধারণ সাহসিকতা ও আত্মত্যাগ চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমরা তাঁদের পাশে আছি এবং যতটা সম্ভব সহায়তা করব।’
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস