সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

ফ্লিকের অধীনে ‘ফিনিক্স পাখি’ বার্সা 

আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:২৪

ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে খেলা বাকি ছিল মাত্র চার মিনিট। দুই দলেই পেনাল্টি শুটআউটে পরিকল্পনা সাজাচ্ছিল। তবে মদ্রিচের পাস বুঝতে পানেননি ব্রাহিম। তাতেই কপাল পুড়ল লস ব্লাঙ্কোসদের। বল পেয়ে কাজে লাগালেন কুন্দে। ডি বক্সের বাইর থেকে নেয়া শর্ট কোর্ডেয়াকে ফাঁকি দিয়ে খুঁজে নেয় জাল। তখন উদযাপনে কাতালানরা। ইয়ামাল-রাফিনিয়া-পেদ্রিদের নিশ্চিত হয় চলতি মৌসুমের দ্বিতীয় শিরোপা। ট্রেবল জয় থেকে এখন কেবল এক পা দূরে বার্সেলোনা। লা লিগা বা চ্যাম্পিয়নস লিগ, যে কোনো একটি শিরোপা জিতলে নিজেদের ইতিহাসে তৃতীয় বারের মতো ট্রেবল জয়ের কীর্তি গড়বে ক্লাবটি। 

শনিবার রাতে এস্তাদিও দে লা কার্তুজাতে কোপা দেল রে'র ফাইনালে ১১ বছর পর মাঠে নেমেছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচের আগে মেট্রো স্টেশন থেকে স্টেডিয়ামসংলগ্ন এলাকা কিংবা গ্যালারি প্রায় সবকিছুই ছিল কাতালান সমথর্কদের দখলে। ম্যাচের শুরু থেকে রিয়ালে ওপর চড়াও হতে থাকে বার্সা। প্রথমার্ধে রিয়ালের গোলবারের একাধিক শর্ট করলেও রিয়াল নিতে পারেনি একটি শর্টও। উলটো ম্যাচে ২৮ মিনিটে ইয়ামালের বাড়িয়ে দেয়া বল ডি বক্সের বাইর থেকে চোখ ধাঁধানো দূরপাল্লার শর্টে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান পেদ্রি। 

তখন আনচেলত্তির কপালে চিন্তার ভাঁজ। ইনজুরির কারণে শুরুর একাদশে এমবাপ্পেকে না রাখলেও দ্বিতীয়ার্ধে এই ফরাসি তারকাকে মাঠে নামাতে দেরি করেননি রিয়াল বস। ইনজুরি মাথায় নিয়ে মাঠে নেমে দলকে সমতায় ফেরান ফরাসি অধিনায়ক। ডি বক্সের বাইর থেকে ফ্রি কিকে সেজনিকে ফাঁকি দিয়ে জাল খুঁজে নেন। তাতে স্বস্তি ফিরে রিয়াল শিবিরে। সমর্থকরা দেখতে থাকেন ক্ষীণ আশা। এর সাত মিনিটের মাথায় চুয়ামেনির গোলে লিড পায় রিয়াল মাদ্রিদ। তখন অনেকে ধরে নিয়েছিলে, বার্সাকে হারিয়ে প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখবে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে লস ব্লাঙ্কোসদের সেই আশায় জল ঢেলে দেন ফেরান তোরেস। লেভানন্দোভস্কির জায়গায় সুযোগ পেয়ে কাজে লাগান তিনি। দলকে ফিরেন সমতায়। ২-২ গোলে সমতায় থেকে শেষ হয় নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা। 

অতিরিক্তি সময়ে ফরাসি ডিফেন্ডার কুন্দের গোলে কাতালরা এগিয়ে গেলেও নাটক শেষ হয়নি তখনো। ম্যাচের শেষ মিনিটের খেলায় আক্রমণে যাচ্ছিলেন এমবাপ্পে। সে সময় ডি বক্সের বাইরে জেরার্ড মার্টিনকে ফাউল করে বসেন এমবাপ্পে। ফেরারি বাজান বাঁশি। তাতে তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেন রিয়ালের খেলোয়াড়রা। রুডিগার-বেলিংহাম ও লুকাস ভাজকেজ রেফারির এমন সিদ্ধান্তে তীব্র প্রতিবাদ জানান। শুধু প্রতিবাদ জানিয়ে ক্ষান্ত হননি তারা। রুডিগার রেফারির দিকে ছুড়ে মারেন আইস বক্স। বেলিংহাম ও ভাজকেজ রেফারিকে উদ্দেশ্য করে কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলতে থাকেন। যার কারণে তিন জনকেই লাল কার্ড দেখান রেফারি। যদিও ম্যাচ শেষে রিয়াল খেলেয়াড়দের গার্ড অফ অনার দেন বার্সেলোনা খেলোয়াড়রা। 

চলতি মৌসুম রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত তিনটি ম্যাচ খেলেছে বার্সা। যার মধ্যে দুটি ছিল ফাইনাল। তিন ম্যাচে শতভাগ জয় নিয়ে স্প্যানিশ ফুটবলের রাজার আসনে কাতালনরা। সেই সঙ্গে হ্যান্সি ফ্লিকের অধীনে যেন ফিনিংস পাখির মতো উড়ছে বার্সা। দলটি দেখছে ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন। দুর্দান্ত জয়ের পর ট্রেবল নিয়ে বার্সা বস বলেন, 'আমরা এখন উদযাপন করব। তারপর বিশ্রাম নিব। অনেক ভালো বিশ্রাম। আমাদের সামনে ট্রেবল জয়ের দুর্দান্ত সুযোগ আছে। তবে এর জন্য আমাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।'

ইত্তেফাক/জেডএইচ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন