বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

এবারের হজযাত্রী সংখ্যা ৮৭ হাজার ১০০

খালি যাচ্ছে হজ ফ্লাইট 

আপডেট : ০৪ মে ২০২৫, ০৬:০০

ভিসা জটিলতা ছাড়াও হজযাত্রীদের সময়মতো অর্থ পরিশোধ ও এয়ারলাইনসগুলোর তথ্য হালনাগাদ না করায় বেশ কিছু ফ্লাইটের টিকিট অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে। একই কারণে ৪ থেকে ১০ মে পর্যন্ত কয়েকটি ফ্লাইটের ৬৪ ভাগ টিকিটও বিক্রি হয়নি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবিক্রিত রয়ে গেছে সৌদি এয়ারলাইনসের টিকিট। ফলে হজযাত্রীর চাহিদা থাকলেও আসন ফাঁকা রেখেই যাচ্ছে অনেক হজ ফ্লাইট।

হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন হাব বলছে, প্রথম দিকের ফ্লাইটগুলোতে আসন ফাঁকা থাকলেও সমস্যা হবে না। যারা ভিসা পাননি তাদের জন্য পরবর্তী টিকিট ইস্যুর ক্ষেত্রে বাড়তি ফি নেওয়া হবে না। ভিসা জটিলতা ছাড়াও এয়ারলাইনসগুলো তথ্য হালনাগাদ ও সময়মতো টাকা পরিশোধ না করার কারণে অনেক হজ ফ্লাইটের সিট ফাঁকা থাকছে।

সংশ্লিষ্ট তথ্য অনুযায়ী, গত ২৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে গত শুক্রবার সকাল পর্যন্ত হজযাত্রী নিয়ে ঢাকা ছেড়েছে ৩৭টি ফ্লাইট। যার মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ১৫টি ফ্লাইটে গেছেন ৬ হাজার ২০২ জন হজযাত্রী, সৌদি এয়ারলাইনসের ১২টি ফ্লাইটে গেছেন ৪ হাজার ৮৫৮ জন ও ফ্লাইনাস এয়ারলাইনসের ১০টি ফ্লাইটে গেছেন ৪ হাজার ৯৪ জন হজযাত্রী। আগামী ৩১ মে পর্যন্ত হজ ফ্লাইটগুলো চলবে। ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১০ জুন।

এয়ারলাইনসের সূত্র মতে, হজযাত্রার পঞ্চম দিনে গতকাল শনিবার ফ্লাইট সংখ্যা ছিল ১০টি। এর মধ্যে সাতটি ফ্লাইটেই অবিক্রিত ছিল ৩ শতাংশ পর্যন্ত টিকিট। যার মধ্যে সবচেয়ে কম টিকিট বিক্রি হয়েছে সৌদিয়া এয়ারলাইনসে। হজ পোর্টালের তথ্য মতে, আজ থেকে আগামী ১০ মে পর্যন্ত কোনো কোনো ফ্লাইটের ৬৪ শতাংশ পর্যন্ত টিকিট অবিক্রিত ছিল।

হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব ফরিদ আহমেদ মজুমদার জানান, সিস্টেম জটিলতার কারণে কিছু ভিসা হচ্ছে না। এ কারণেই জটিলতা হচ্ছে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে— ফ্লাইটগুলোর তথ্য এসএমএস সিস্টেমে এন্ট্রি দিতে হয়। দেখা যাচ্ছে এয়ারলাইনসগুলো সঠিক তথ্য দিচ্ছে না। এ কারণে অনলাইনে দেখা যায় আসন ফাঁকা। তার ওপর হজযাত্রীদের জন্য এবার নুসুক মাশায়ের প্ল্যাটফরম নামে নতুন একটি প্ল্যাটফরম চালু করেছে সৌদি। এ কারণে দেখা যাচ্ছে, কিছু কিছু ভিসা আটকে যাচ্ছে। এসব জটিলতা নিরসনে ধর্ম উপদেষ্টা সৌদি ধর্মমন্ত্রীকে একটা ডিও লেটার দিয়েছেন। শিগগিরই এই জটিলতার নিরসন হবে।  

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ বলেন, ‘মূলত ভিসা ইস্যুতে কিছুটা জটিলতা হচ্ছে। ভিসাটা ঠিক সময়ে না পাওয়ার কারণে কিছু সিট খালি যাচ্ছে। এটাই মূল কারণ। সিটগুলো বিক্রি হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু যেসব যাত্রীর যাওয়ার কথা তাদের ভিসা রিলিজ হতে অ্যাম্বাসির যে ক্লিয়ারেন্স লাগে তা না হওয়ায় এ সিটগুলো খালি যাচ্ছে। 

হজযাত্রী পরিবহনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এবার ১১৮টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। বিমানের এমন কোনো জটিলতা রয়েছে কি না জানতে চাইলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক বুশরা ইসলাম ইত্তেফাককে বলেন, ‘আমাদের নির্দিষ্ট পরিমাণ হাজি আছেন। ফলে কোনো আসন ফাঁকা থাকছে না। যে কারণে জটিলতাও নেই।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হজ অফিসের পরিচালক লোকমান হোসেন বলেন, ‘কারো যদি এমন হয়, ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার জন্য নির্ধারিত সময়ের ফ্লাইটে যেতে না পারে, সেক্ষেত্রে টিকিট রি-ইস্যুতে কোনো ধরনের ফি গুনতে হবে না।’

প্রসঙ্গত, এবারের হজযাত্রীদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাবেন ৫ হাজার ২০০ জন। বেসরকারি মাধ্যমে যাবেন ৮১ হাজার ৯০০ জন্য হজযাত্রী। হজযাত্রী পরিবহনে এবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস হজের আগে ১১৮টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। হজের পরে করবে ১০৯টি ফ্লাইট পরিচালনা। এছাড়া সৌদি এয়ারলাইনস হজের আগে ৮০টি ও হজের পরে ৭৯টি এবং ফ্লাইনাস এয়ার হজের আগে ৩৪টি ও হজের পরে ৩৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।

হাজিদের নিয়ে প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ১০ জুন শুরু হয়ে চলবে ১০ জুলাই পর্যন্ত। হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশনের এই টাইমলাইন সামনে রেখেই রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্পে এবার বাংলাদেশ বিমানের যাত্রীদের জন্য ১০টি, সৌদি এয়ারলাইনসের জন্য ১০টি ও ফ্লাইনাসের জন্য ৬টি ডেস্ক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে নিয়মিত ফ্লাইটে বহির্গমনকারী হাজিদের জন্য ১২টি ডেস্ক প্রস্তুত থাকবে।

ইত্তেফাক/এমএএম