বাস ও সিএনজি শ্রমিকের মধ্যে মারামারিকে কেন্দ্র করে জেলা বাস ও মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের কারণে ভোলা থেকে ৫ রুটে বন্ধ হয়ে পড়েছে বাস চলাচল।
সোমবার (৫ মে) সকাল থেকে ৫ রুটে বাস চলাচল বন্ধের কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। এর আগে রোববার যাত্রী উঠানোকে কেন্দ্র করে ভোলায় বাস শ্রমিক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিকদের দ্বন্দ্বে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে বাসশ্রমিক ইউনিয়ন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকেলে ভোলার বাংলাবাজার সংলগ্ন এলাকায় সাইট দেওয়াকে কেন্দ্র করে অটোরিকশাচালক ও বাস শ্রমিকদের মধ্যে প্রথমে তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভেদুরিয়া, কুঞ্জেরহাট ও লালমোহনে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে জড়ায় তারা। এ সময় সিএনজি চালিত কয়েকটি অটোরিকশা ও বাস ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।
সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির দাবি, বাংলাবাজারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েকটি অটোরিকশা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বাস–মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের কর্মীরা। তবে পাল্টা অভিযোগ করে বাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা বলছেন, অটোরিকশাচালকেরা পাঁচ স্থানে বাসশ্রমিকদের মারধর ও দুটি বাস ভাঙচুর করেছেন।
বাস–মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, পরিকল্পিতভাবে পাঁচটি স্থানে সিএনজিচালকেরা বাসশ্রমিকদের গায়ে হাত দিয়েছেন এবং দুটি বাস ভাঙচুর করেছেন। এ কারণে ধর্মঘট ডেকেছেন তারা।
সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক-শ্রমিক সমিতির সভাপতি মো. জাকির হোসেন বলেন, বাসশ্রমিকেরা ধর্মঘট ডাকার পর যাত্রী পরিবহন করায় বাসস্ট্যান্ডের মধ্যে তিনটি অটোরিকশা ভাঙচুর ও একটিতে অগ্নিসংযোগ করেছে। পরে লালমোহনে দুটি বাস আটকে রাখেন ক্ষুব্ধ চালকেরা। তবে কেউ ভাঙচুর করেননি।
এদিকে ধর্মঘটের কারণে বন্ধ রয়েছে ভোলা-চরফ্যাশন, ভোলা-তজুমদ্দিন, ভোলা-দৌলতখান, ভোলা-ইলিশা ও ভোলা-ভেদুরিয়া রুটসহ ৫ রুটের বাস চলাচল। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ৫ রুটের কয়েক হাজার যাত্রী। ধর্মঘটের সুযোগে ছোট যানবাহনগুলো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বলেও অভিযোগ যাত্রীদের।
যাত্রী মো. মঞ্জু, কামাল ও সাদ্দাম হোসেন জানান, তারা বরিশাল থেকে ভোলার বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস স্ট্যান্ডে এসেছেন। লালমোহন যাবেন, কিন্তু বাস বন্ধ। এখন বিকল্প যানবাহন হিসেবে মাইক্রোবাসে করে যাবেন। তবে বাসের চেয়ে ভাড়া দ্বিগুণ গুনতে হচ্ছে। তারপরও যেতে হবে কিছু করার নাই।
ভোলা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাহাদাত হাসনাইন পারভেজ জানান, সমস্যা সমাধানের জন্য বাস ও সিএনজি শ্রমিকদের সঙ্গে রাত থেকেই আলোচনা করছেন তারা। আশা করা যাচ্ছে দ্রুত সমাধান হবে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।