রোববার, ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

চুয়াডাঙ্গায় গরমে গলে যাচ্ছে সড়কের পিচ, খামারে মরছে মুরগি

আপডেট : ০৯ মে ২০২৫, ১৮:৪৬

মাত্র তিন ঘণ্টার ব্যবধানে ৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি বেড়ে চুয়াডাঙ্গার তাপামাত্রার পারদ পৌঁছেছে ৪২ দশমিক ২ ডিগ্রিতে। প্রখর রোদে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন সড়কের পিচঢালা সড়ক গলে যাচ্ছে। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সেখানকার মানুষের জনজীবন। বিভিন্ন পোল্ট্রি খামারে মুরগি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খামারিরা।

শুক্রবার (৯ মে) বেলা ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ২৪ থেকে ৩৩ শতাংশ। চলতি মৌসুমের জেলার এটিই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।  

এদিকে তীব্র তাপদাহে শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালকরা বিপাকে পড়েছেন। শহরের কোর্টরোড-বড়বাজার সড়কে পিচ গলে যেতে দেখা গেছে। আর গরমের কারণে মানুষের স্বাভাবিক চলাফেরায়ে নেমেছে ছন্দপতন। নিম্নআয়ের মানুষ রোদে ও গরমে কাজ করতে পারছেন না। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না অনেকেই। 

শুক্রবার সকাল থেকে শহর ঘুরে দেখা গেছে, রিকশা ও ভ্যানচালকরা কাজ করতে হাঁপিয়ে উঠছেন। অনেককে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে। রোদ-গরমের মধ্যেই অনেক দিনমজুরকে জরুরি কাজ করতে দেখা গেছে। ঘামে তাদের পুরো শরীর ভিজে গেছে।

দিনমজুর মো. মিলন বলেন, কদিন ধরে গরমে কাজ করতে পারছি না। তবু পেটের দায়ে কাজে বের হতে হচ্ছে। কাজ না করলে সংসার চলবে না। তাই রোদের মধ্যে কাজে বের হয়েছি।

তীব্র তাপদাহে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে সর্তক থাকার পরামরশ দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, তীব্র তাপদাহে বয়স্কদের সবচেয়ে বেশি হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। ৩৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা পার হলেই এই ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। এজন্য অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বেশি বেশি পানি ও ফলের রস খেতে বলা হচ্ছে। একইভাবে শিশু, কিশোরদের ঘন ঘন পানি ও শরবত পান করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা শহরের মুরগি খামারী সাদাত করিম খান শুভ বলেন, তীব্র গরমে বয়লার মুরগী মারা যাচ্ছে। পাশাপাশি ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে আরও বেশি সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। পোল্ট্রি, লেয়ার, কালার বার্ড, সোনালীসহ বিভিন্ন জাতের মুরগি মারা যাচ্ছে গরমে। খামারিদের পথে বসার অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা শহরের সিয়াম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, রোদের প্রচুর তেজ। বাইরে বের হওয়া যাচ্ছেনা। ঘরের মধ্যেও প্রচণ্ড গরম। ফ্যান ছাড়লে মনে হয় বাতাস থেকেও আগুন বের হচ্ছে।

এদিকে আবহাওয়া পূর্বাভাস কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গায় আগামী ১৩ মে পর্যন্ত তাপমাত্রা থাকবে বেশি। এসময় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যেতে পারে। তারপর বৃষ্টি হতে পারে। পরে নিম্নচাপও দেখা দিতে পারে।

চুয়াডাঙ্গার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক জামিনুর হক বলেন, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যা আগামী ১৩ মে পর্যন্ত ক্রমেই বাড়তে পারে। ৪২ ডিগ্রি পার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর থেকে তাপমাত্রা কমতে পারে।

ইত্তেফাক/এপি