রোববার, ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

লিটনদের পাকিস্তান সফর নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে আজ

আপডেট : ১০ মে ২০২৫, ০৯:৩১

সময় যত যাচ্ছে ভারত-পাকিস্তানের চলমান সংঘাত গাঢ় হচ্ছে। সীমান্তের উত্তেজনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধাপে ধাপে এগোচ্ছে যুদ্ধাবস্থার দিকে। যার ছাপ পড়েছে দুই দেশের ক্রিকেটাঙ্গনেও। আর তাতে বিপাকে পড়েছে বাংলাদেশ দল। চলতি মাসেই পাকিস্তান সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। সে জন্য বিসিবি ঘোষণা করেছে ১৬ সদস্যের স্কোয়াড, তারা গেল কয়েক দিন ধরে মিরপুরে অনুশীলন করছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। যেটা সম্পর্কে অবগত রয়েছে খোদ বিসিবিও। তাই সেখানকার পরিস্থিতি গেল তিন দিন ধরে পর্যবেক্ষণ করছে তারা। এই সফর নিয়ে আজ বিসিবির পরিচালকরা আলোচনা করবে এক সভায়। তারপরই আসবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। অর্থাৎ শনিবারের সভার পর জানা যাবে লিটন বাহিনী সূচি অনুসারে পাকিস্তান সফর করবে নাকি অন্য পথে হাঁটবে।

এদিকে পাকিস্তানি গণমাধ্যমগুলো বলছে সূচি অনুসারে যথা সময়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এই সিরিজ মাঠে গড়ানো নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। দেশটির গণমাধ্যম জিও নিউজ কারণ হিসেবে জানিয়েছে চলমান পিএসএল এর সূচি পরিবর্তন। বাংলাদেশ সফরের প্রাথমিক সূচি অনুযায়ী, দুইটি ভাগে বিভক্ত হয়ে লিটন দাসরা আগামী ২১ মে পাকিস্তানে পৌছানোর কথা ছিল। এরপর ২৫ মে ফয়সালাবাদে শুরু হওয়ার কথা ছিল এই সিরিজটি। তবে হঠাৎ করেই পিএসএল-এর বাকি ম্যাচগুলো সংযুক্ত আরব আমিরাতে (দুবাই) সরিয়ে নেওয়া সিরিজটির সূচিতে বাধা আসবে। এমনটি হলে বাতিল হতে পারে বাংলাদেশের সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি টোয়েন্টি সিরিজও। 

জিও টিভি জানিয়েছে, ‘পূর্ব সূচি অনুসারে পিএসএল-এর ফাইনাল আগামী ১৮ মে হওয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে তা আরো পিছিয়ে যাবে। টুর্নামেন্টটির বাকি রয়েছে আরো আট ম্যাচ। সংযুক্ত আরব আমিরাতে পিএসএলের ম্যাচ চালু করতে এক সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। কারণ, সম্প্রচারসহ বিভিন্ন লজিস্টিক্যাল বিষয় স্থানান্তরের ব্যাপার রয়েছে। তাতে স্বাভাবিকভাবেই পিএসএলের বাকি ম্যাচগুলো শেষ হতে হতে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ শুরুর সময় চলে আসবে। তাতে দুই সূচির মধ্যে ঝামেলা হয়ে যাবে। এছাড়া চাইলেও পাকিস্তান ঘরের মাটিতে সিরিজটি আয়োজন করতে পারবে না চলমান সংঘাতের কারণে। সব কিছু মিলিয়েই টাইগারদের পাকিস্তান সফরটি বর্তমানে প্রায় অনিশ্চিত। তা নিয়েই আজ সিদ্ধান্ত নিবে বিসিবি।

যদিও পিসিবির আন্তর্জাতিক বিভাগের পরিচালক উসমান ওয়াহলা বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সিরিজটি নিয়ে শঙ্কার কিছু দেখছেন না বলেই জানিয়েছেন। দুই দেশের মধ্যে সিরিজটি নিয়ে নিয়মিত কথা হচ্ছে বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, 'সিরিজের এখনো প্রায় দুই সপ্তাহ বাকি। তাই আমরা এখনই কোনো শঙ্কার কিছু দেখছি না। এখনো এমন কোনো পরিস্থিতি হয়নি যাতে তা বন্ধ করতে হয়। আমরা বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ নিয়ে আশাবাদী এবং নিয়মিত দুই বোর্ডের যোগাযোগ হচ্ছে।'

এশিয়া কাপ ও বাংলাদেশে ভারতের সফরও অনিশ্চিত আগামী আগস্ট মাসে তিনটি করে ম্যাচের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে আসার কথা রয়েছে ভারতের। তবে বর্তমান ভারত-পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনায় বাতিল হতে পারে এই সিরিজ দুটি। শুধু তাই নয়, শঙ্কা রয়েছে আগামী সেপ্টেম্বরে বসতে যাওয়া এশিয়া কাপও বাতিল হওয়ার। যার আয়োজক হওয়ার কথা ছিল ভারতের। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে ভারতের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।

গণমাধ্যমটির মতে, ভারতের আসন্ন বাংলাদেশ সফর এবং এশিয়া কাপ নিয়ে নেতিবাচক অবস্থান নিয়েছে বিসিসিআই। সম্প্রতি পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পালটাপালটি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আইপিএলের ১৮তম আসরের খেলা স্থগিত করা হয়েছে। বিসিসিআই জানিয়েছে, আপাতত এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হলেও, তবে টুর্নামেন্টটির খেলা পুনরায় শুরু হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাতে অনিশ্চয়তার মধ্যে দাঁড়িয়ে আইপিএলের বাকি ১৬টি ম্যাচের ভাগ্য। চলতি মাসেই টুর্নামেন্টটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, নতুন করে সূচি তৈরি করতে গেলে তা পিছিয়ে যেতে পারে কয়েক মাস। যার প্রভাব পড়বে এশিয়া কাপ ও বাংলাদেশ সফরে।

আগামী মাসের জনের প্রথম সপ্তাহে ইংল্যান্ড সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে ভারতীয় দলের, যেখানে পাঁচ টেস্টের একটি দীর্ঘ সিরিজে অংশ নেবে তারা। এরপর নির্ধারিত ছিল বাংলাদেশের মাটিতে একটি পূর্ণাঙ্গ সফর। কিন্তু বিসিসিআই যদি আইপিএলের বাকি অংশ আয়োজনের জন্য সময় বের করতে চায়, তবে সেটি সম্ভব হতে পারে বাংলাদেশের সিরিজ এবং এশিয়া কাপের সময়েই। ফলে উভয় টুর্নামেন্টই বাতিল হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার সূত্র অনুযায়ী, বিসিসিআই কোনোভাবেই এই সূচিতে নমনীয়তা দেখাতে রাজি নয়। তাই ভারতীয় বোর্ডের অবস্থান পরিবর্তন না হলে, বাংলাদেশের মাটিতে আসন্ন ভারত সফর এবং বহুল প্রতীক্ষিত এশিয়া কাপ দুটি পড়তে পারে অনিশ্চয়তার মুখে।

ইত্তেফাক/এনএন