ডিজিটাল নিরাপত্তা এখন আর কেবল প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের বিষয় নয়, সাংবাদিকতা ও অধিকার রক্ষার সঙ্গেও এটি গভীরভাবে জড়িত। এই বার্তা সামনে রেখে আজ ঢাকার লালমাটিয়ায় এনজিও ফোরাম ফর পাবলিক হেলথ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো “সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা ও সুরক্ষা” শীর্ষক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘ভয়েস’ এই কর্মশালার আয়োজন করে।
এই প্রশিক্ষণে অংশ নেন সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও অনলাইন মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে কাজ করা তরুণ সাংবাদিক এবং মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা। কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীগণ ডিজিটাল নিরাপত্তা ও অনলাইন সুরক্ষার বিভিন্ন দিক, ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ বা থ্রেট মডেলিং, নিরাপদ ব্রাউজিং ও যোগাযোগ, এনক্রিপশন, দুই ধাপ বিশিষ্ট লগইন ব্যবস্থা, ডিজিটাল স্বাস্থ্যবিধি বা হাইজিন এবং প্রাইভেসি সচেতনতা বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ লাভ করেন।
ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, “ডিজিটাল পরিসরে যেভাবে রাষ্ট্র, কর্পোরেট সংস্থা কিংবা ব্যক্তি পর্যায়ের নানা ধরনের নজরদারি, হয়রানি ও নিপীড়নের ঘটনা বাড়ছে, তা থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে হলে ডিজিটাল নিরাপত্তার বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে ও সচেতন ডিজিটাল নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে ডিজিটাল সাক্ষরতা বৃদ্ধি এখন সময়ের দাবি।”
কর্মশালায় ডিজিটাল সুরক্ষার কৌশলপত্র উপস্থাপন করেন ভয়েস-এর উপ-পরিচালক, মুশাররাত মাহেরা। তিনি বলেন, “সুরক্ষিত মাধ্যমে পেশাগত যোগাযোগ করলে পরীক্ষিত ভাবে ডিজিটাল হুমকি ও হয়রানি এড়িয়ে চলা যায় যা নারী সাংবাদিক ও অধিকারকর্মীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
কর্মশালায় ঝুঁকি আত্মবিশ্লেষণকারী থ্রেট মডেলিং, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ও গুরুত্বপূর্ণ সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন, ভিপিএন, টর ব্রাউজারে নিরাপদ ব্রাউজিং, এনক্রিপ্টেড বার্তা এবং ডেটা ব্যাকআপের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এছাড়া, অংশগ্রহণকারীরা, ভাইরাসযুক্ত লিংক চেনার উপায়, মোবাইল ও সোশ্যাল মিডিয়ায় গোপনীয়তা রক্ষা, মাঠপর্যায়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে পাবলিক ওয়াইফাই এড়ানো ও জিও-লোকেশন ট্র্যাকিং বন্ধ রাখা ইত্যাদি বিষয়ে দলগত কার্যক্রমের মাধ্যমে অনুশীলন করেন।
কর্মশালার সঞ্চালক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিজিটাল নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ, আশরাফুল হক এবং সাদমান আহমেদ।