বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

ঈদের ছুটিতে রাতের ঢাকায় নিরাপত্তায় থাকবে ৫০০ পেট্রোল টিম: ডিএমপি কমিশনার

আপডেট : ০৬ জুন ২০২৫, ১৩:৪৮

ঈদুল আজহার ছুটিতে ঢাকা মহানগরীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাতের বেলায় ৫০০টি ও দিনে ২৫০টি পেট্রোল টিম মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। শুক্রবার (৬ জুন) সকালে জাতীয় ঈদগাহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা জানান।

কমিশনার বলেন, 'জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৭টায়। এখানে একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ, বিচারপতি, উপদেষ্টা এবং ঢাকায় অবস্থানরত মুসলিম দেশের কূটনীতিকরাও এতে অংশ নেবেন। ঈদগাহে ৫টি প্রবেশপথ থাকবে, এর মধ্যে ৪টি পুরুষ ও ১টি নারী মুসল্লিদের জন্য নির্ধারিত।'

ডিএমপি কমিশনার জানান, আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে ঈদের প্রধান জামাত সকাল ৮টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। মসজিদটিতে মোট ৫টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে, যার প্রথমটি শুরু হবে সকাল ৭টায়।

তিনি বলেন, 'এ বছর মহানগরীতে মোট ১১৮টি ঈদগাহ ও ১,৬২১টি মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া শিয়া ও কাদিয়ানি সম্প্রদায় ৮টি এবং সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আরও ৩টি জামাতের আয়োজন করেছে।'

জাতীয় ঈদগাহ ও বায়তুল মোকাররমসহ ঢাকার প্রতিটি ঈদগাহ ও মসজিদ এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে সমন্বিত ও নিশ্ছিদ্র ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। এরই অংশ হিসেবে ঈদগাহ মাঠ ও আশপাশের এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ, তিনটি প্রধান প্রবেশপথে ব্যারিকেড ও তল্লাশির ব্যবস্থা এবং মুসল্লিদের আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে প্রবেশ করানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, 'সোয়াট টিম, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা পুরো এলাকায় প্রস্তুত থাকবে। সাদা পোশাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক গোয়েন্দা সদস্য মোতায়েন থাকবে এবং আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে।'

নারীদের জন্য থাকবে পৃথক প্রবেশপথ ও নামাজের ব্যবস্থা। ঈদগাহের আশপাশের এলাকাগুলো সিটিটিসি ও এসবির সুইপিং টিম এবং ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হবে। পর্যবেক্ষণের জন্য ওয়াচ টাওয়ার স্থাপনসহ নিরাপত্তায় অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে সার্বক্ষণিক সমন্বয় রক্ষা করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমেও একই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মহানগরীর প্রতিটি ক্রাইম ডিভিশন সংশ্লিষ্ট আয়োজকদের সঙ্গে সমন্বয় করে অন্যান্য ঈদগাহেও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে।

নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, 'নিরাপত্তার স্বার্থে তল্লাশিতে সহায়তা করুন। কেউ যেন ঈদ জামাতে কোনো ব্যাগ, দাহ্য বস্তু বা ধারালো জিনিস সঙ্গে না আনেন। জামাত শেষে সুশৃঙ্খলভাবে বের হয়ে যাবেন এবং সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়লে নিকটস্থ পুলিশ সদস্যকে জানান।'

তিনি কোরবানির পশুর বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে ব্যবস্থাপনার আহ্বান জানান এবং যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে জাতীয় হটলাইন ৯৯৯ বা পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করার অনুরোধ করেন।

ঈদের ছুটিতে ফাঁকা হয়ে যাওয়া রাজধানীর নিরাপত্তা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'রাতের সময় ৫০০টি ও দিনে ২৫০টি পেট্রোল টিম কাজ করবে। গাড়ি, ফুট পেট্রোল ও মোবাইল পেট্রোল বাড়ানো হয়েছে। এমনকি অফিসে থাকা কর্মকর্তাদেরও দায়িত্ব ভাগ করে দিয়ে মাঠে নামানো হয়েছে। চেকপোস্টে তল্লাশিও থাকবে। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, যেন নগরবাসী শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারে।'

ইত্তেফাক/টিএইচ