শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফ

ভারত না থাকায় খানিকটা আক্ষেপ কিরণের

আপডেট : ১৬ জুন ২০২৫, ১৮:০৪

সবকিছু ঠিক থাকলে পূর্বনির্ধারত সূচি অনুসারে আগামী ১১ জুলাই বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় শুরু হচ্ছে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫। টুর্নামেন্টটি মাঠে গড়ানোর কথা ছিল পাঁচ দেশ নিয়ে। তবে শেষ মুহূর্তে নিজেদের নাম সরিয়ে নেয় ভারত। তবে কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি সে সম্পর্ক বিস্তারিত কিছুই জানা যায়নি। ফলে চার দল নিয়েই এবারের আসরটি মাঠে গড়াবে। 

স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়া বাকি দলগুলো হলো নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও ভুটান। কাগজে কলমে বাকি তিন দলের থেকে ঢেড় এগিয়ে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরাই। বাংলাদেশের সঙ্গে এই টুর্নামেন্টে লড়াই করে একমাত্র ভারতই। তারা না থাকায় খানিকটা আক্ষেপই দেখা দিয়েছে বাফুফের নির্বাহী সদস্য ও নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণের কণ্ঠে।

গতকাল গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে আসন্ন বয়সভিত্তিক সাফে নিজেদের দল নিয়ে প্রত্যাশা জানিয়ে কিরণ বলেন, 'বয়সভিত্তিক সাফে দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় বেশির ভাগ টুর্নামেন্টেই আমরা চ্যাম্পিয়ন। আমি কম্পিটিশন করে জেতার পক্ষে, তাতে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। একই সঙ্গে আমরাও জানতে পারি, দলের অবস্থান কী এবং শক্তির জায়গা কোথায়। তো ভারত শেষ মুহূর্তে টুর্নামেন্ট থেকে নিজেদের সড়িয়ে নিয়েছে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই, তবে বাকি দলগুলোর সঙ্গে অবশ্যই আমরা খেলব। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই মাঠে নামব, আমাদের মেয়েরা সেইভাবেই খেলবে।'

এ সময় টুর্নামেন্টে ভারত না থাকায় খানিকটা হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, 'আমরা চেয়েছিলাম ভারতকে মাঠে রেখেই জিততে, এমনটা চাই না যে তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষ থাকুক আর তাদের হারিয়ে আমরা শিরোপা জিতে নিয়ে আসি। ঐরকম শিরোপা আমাদের দরকার নেই। আমি চাই, আমার প্রতিপক্ষ শক্তিশালী থাকুক, তাদের সঙ্গে খেলে আমরা জিতবো। তারপর আমরা শিরোপা জিতলে আলাদা আনন্দ কাজ করবে নিজেদের মধ্যে। তবে এখন যারা আছে, তাদেরও আমরা ছোটো করে দেখছি না, তারাও ভালো দল। আশা করছি, তাদের সঙ্গেও প্রতিযোগিতাপূর্ণ ম্যাচ হবে।'

শুধু বয়সভিত্তিক দল নয়, গেল কয়েক বছরে নারীদের মূল দলও দুর্দান্ত পারফর্ম করছে। সবশেষ জর্ডানে ত্রিদেশীয় প্রীতি ম্যাচ খেলে ইন্দোনেশিয়া ও স্বাগতিক জর্ডানকে রুখে দিয়ে ফিফা র‍্যাংকিংয়ে পেয়েছে সুখবরও। দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দল হিসেবে র‍্যাংকিংয়ে উন্নতি করে ১২৮তম স্থানে উঠে এসেছে লাল সবুজের মেয়েরা। তবে এখানেই আটকে থাকতে চাইছেন না নারী উইংয়ের প্রধান। তার লক্ষ্য আরও দূর। 

তিনি বলেন, 'আমরা দুই দুইবার দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন। হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা এই দক্ষিণ এশিয়ার গন্ডিতেই থাকতে চাইছি না। তবে পরবর্তী ধাপে যেতে হলে ধারাবাহিক ভাবে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলতে হবে আমাদের। ফিফা প্রীতি ম্যাচ খেলতে হবে বছরে অন্তত পাঁচ-ছয়টা। আমরা জর্ডান এবং ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে যে ম্যাচ দুটি খেলেছি-দুটোতেই আমরা অনেক ভালো করেছি। এই ফলাফলে আমরা অবশ্যই খুশি। সামনে যেহেতু এএফসি নারী এশিয়ান কাপ বাছাইপর্ব আছে মিয়ানমারে তার আগে এই ফলাফল নারীদের জন্য অনেক বড় একটা শিক্ষা।'

ফিফা উইন্ডোতে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আরও প্রীতি ম্যাচ খেলতে চায় বাংলাদেশের মেয়েরা। লক্ষ্য একটাই, এশিয়ার সেরা দল হওয়া। ইতিমধ্যে এ নিয়ে বাফুফের সঙ্গে আলোচনা করেছেন কিরণ। এ প্রসঙ্গে বলেন, 'সভাপতিকে (বাফুফে) আমরা জানিয়েছি যে, আমাদের সাপোর্ট লাগবে। একটা খেলেই তো হবে না, আমরা সামনের ফিফা উইন্ডোগুলোতেও খেলতে চাই। আমাদের এই প্রক্রিয়া ধারাবাহিক রাখতে হবে। যদি আমরা এশিয়ান পর্যায়ে যেতে চাই।' 

জর্ডান ও ইন্দোনেশিয়ার পর সামনে আর কোনো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে মাঠে নামতে চায় লাল-সবুজরে মেয়েরা নারী উইংয়ের প্রধানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, 'আসলে এইগুলো এভাবে বলা যায় না। কারণ উইন্ডোতে প্রতিপক্ষ ঠিক করতে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয় অনেক কিছু করতে হয়। দুই দেশের মধ্যে অনেক কিছু মিলে না, তবে পুরুষদের দল হলে কাজটা সহজ হয়। নারী ফুটবলে তেমনটি নয়, বিশেষ করে করোনার পর প্রক্রিয়াটা আরও কঠিন হয়ে গিয়েছে। চায়না-জাপান-অস্ট্রেলিয়া এরা ছাড়া বেশির ভাগ ফেডারেশনই নারী ফুটবল নিয়ে কাজ একটু কমিয়ে দিয়েছে। জর্ডান এবং ইন্দোনেশিয়াকে অনেক কষ্টে রাজি করাতে হয়েছিল।'

ইত্তেফাক/জেডএইচ