দুর্ভোগে যাত্রীরা
মো. লুত্ফুর রহমান, কুমিল্লা প্রতিনিধি
এক যুগে বন্ধ হয়ে গেছে কুমিল্লা অঞ্চলের ১৩টি রেল স্টেশন। এসব স্টেশনের প্লাটফর্মে কৃষকদের ধান মাড়াই ও গরু-ছাগল বাঁধার কাজ চলে। এছাড়া বন্ধ থাকা অধিকাংশ স্টেশন ঘিরে বখাটে ও মাদকাসক্তদের আস্তানা গড়ে উঠেছে। এতে সামাজিক পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। এদিকে স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকার যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। এগুলোর কোনোটিতে লোকাল ট্রেন থামলেও স্টেশন বন্ধ থাকায় বিনা টিকিটে ভ্রমণ করেন যাত্রীরা। ফলে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। জনবল সংকটের কারণে অধিকাংশ রেল স্টেশন বন্ধ হয়ে আছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বন্ধ স্টেশনগুলোর মধ্যে রয়েছে, লাকসাম-চাঁদপুরের শাহতলী, মৈশাদী, বলাখাল ও শাহরাস্তি। লাকসাম-নোয়াখালী রেল সড়কের দৌলতগঞ্জ, খিলা, বিপুলাসার, বজরা ও মাইজদী। লাকসাম-আখাউড়া রেল সড়কের আলী শহর, ময়নামতি ও রাজাপুর। লাকসাম-চট্টগ্রাম রেল সড়কের নাওটি। এসব স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট এলাকার স্কুলকলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার যাত্রীদের ভোগান্তি অনেক বেড়ে গেছে। জানা যায়, জনবল সংকটের কারণে অধিকাংশ রেল স্টেশন বন্ধ হয়েছে। এছাড়া ট্রেনে যাত্রী সেবার মান নিম্নমুখী হওয়ায় যাত্রীরা রেল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার খিলা রেল স্টেশন এলাকায় গিয়ে জানা যায়, স্টেশনটি প্রায় ১০ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। সেখানে আশপাশের বাসিন্দাদের গরু-ছাগল বিচরণ করছে। স্থানীয়রা জানায়, সেখানে রাতেরবেলায় মাদকাসক্ত ও বখাটে মাস্তানদের আস্তানা গড়ে উঠেছে। বন্ধ থাকা অধিকাংশ স্টেশনের একই অবস্থা বলে জানা গেছে। এতে সংশ্লিষ্ট এলাকার সামাজিক পরিবেশ কলুষিত হচ্ছে। লাকসাম-নোয়াখালী রেল সড়কের বিপুলাসার স্টেশন সংলগ্ন এলাকার মো. খলিলুর রহমান জানান, তিনি লাকসাম উপজেলার একটি কলেজের শিক্ষক। স্টেশনটি বন্ধ থাকায় কলেজে যাতায়াতে প্রতিদিন তাকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। খিলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম জানান, খিলা রেল স্টেশনটি বন্ধ থাকায় বাজারের ব্যবসায়ী ও নানা শ্রেণিপেশার স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
রেলওয়ে কুমিল্লার ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) লিয়াকত আলী মজুমদার বলেন, স্টেশনমাস্টার ও জনবল সংকটের কারণে স্টেশনগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। স্টেশনমাস্টার নিয়োগ দেওয়া হলে এসব স্টেশন পুনরায় চালু হবে।