বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯টি কম্পিউটার চুরির বিষয়ে প্রশাসন এবং কর্মচারীদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি)। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন বলছে নিরাপত্তা প্রহরীদের কোনো ছুটি দেয়া হয়নি। অপরদিকে কর্মচারীরা বলছে ছুটি নিয়েই প্রহরীরা অনুপস্থিত ছিল।
গত ২৬ জুলাই রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার একুশে ফেব্রুয়ারি লাইব্রেরি ভবনের পিছনের দিকের জানালা ভেঙে ৪৯টি কম্পিউটার চুরি করে একটি চক্র। এদিন ৩০ জন নিরাপত্তা প্রহরীর দায়িত্ব থাকলেও ২০ জন অনুপস্থিত ছিল। বাকি ১০ জন প্রহরীর মধ্যে ৩ জন দায়িত্বে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে কুশলি ক্যাম্পাসে। আর নিরাপত্তারহীনতার এই সুযোগকেই কাজে লাগায় চোর চক্রটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, এসকল কর্মচারীরা আবেদন করে ছুটি নিয়েছিল এবং সে ছুটির আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছিল। তবে ছুটির আবেদন মঞ্জুর করা হয়নি বলে উল্লেখ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. নূরউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, তারা ছুটির আবেদন করেছিল কিন্তু তাদের বলা হয় এভাবে ছুটি হবে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান বলেন, কোন প্রকার নোটিশ ছাড়া তারা কেন অনুপস্থিত থাকলো এবং এর পিছনে কোন পরিকল্পনা ছিল কিনা সেটি জানার জন্য সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আশা করি তদন্ত শেষে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
এদিকে, কম্পিউটার চুরির বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরে আসে গত ৯ আগস্ট। পরদিন ১০ আগস্ট এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ১৩ আগস্ট রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত হোটেল ক্রিস্টাল ইনে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩৪টি কম্পিউটার উদ্ধারসহ দু'জনকে গ্রেফতার করে। ধারাবাহিক অভিযানে পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়টির এক শিক্ষার্থীসহ আরও পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে গ্রেফতারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এপর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিন দফায় ১৪৬টি কম্পিউটার চুরি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে চোর চক্রটির মূল হোতাকে বের করতে পারলে এসকল চুরির রহস্য বেরিয়ে আসবে। এজন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সাইদুর রহমান খান।
ইত্তেফাক/আরকেজি