বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

জিডিপিতে ভারতকে ছাড়িয়ে যাওয়া অগ্রযাত্রার পরিচয়

আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০২০, ০৯:৩৩

বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের বিস্ময় আজ বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পাকিস্তানি দুঃশাসনের হাত থেকে স্বাধীনতা লাভ করার পর মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেট নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল যে ছোট্ট দেশটি, সেই দেশের বাজেট আজ ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছে গেছে! ছোট্ট অর্থনীতির দেশটা আজ পরিচিতি পেয়েছে এশিয়ার ‘টাইগার ইকোনমি’ হিসেবে। চলতি অর্থবছরে মাথাপিছু জিডিপির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশ ভারতকেও পেছনে ফেলেছে। এটি সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতির সম্মানজনক পারফরম্যান্স, ভারতের অর্থনীতির ধীর প্রবৃদ্ধি ও করোনা ভাইরাসের কারণে অর্থনীতির খাঁড়া সংকোচনের ফলে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক (ডব্লিউইইও) ডাটাবেজ অনুসারে, ডলারের হিসাবে বাংলাদেশ তার মাথাপিছু জিডিপি হিসাবে ভারতকে পেছনে ফেলেছে। বাংলাদেশে মাথাপিছু জিডিপি ভারতের জিডিপির তুলনায় দ্রুত হারে বাড়ছে। তবে মাথাপিছু আয় অধিকতর হলেও মনে রাখতে হবে, ভারতের অর্থনীতি একটি বিশাল অর্থনীতি এবং এই শর্তে এ নিয়ে আত্মতুষ্টিতে কম ভাবতে হবে। তাছাড়া এসব সংস্থার প্রক্ষেপণও অনেক সময় নির্ভুলতার প্রশ্নে মান যাচাইয়ের দাবি রাখে।

গত ১৩ অক্টোবর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ ‘একটি দীর্ঘ ও কঠিন অগ্রগতি’ শিরোনামের এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে তারা দেখিয়েছে, অন্যান্য উদীয়মান দেশের অর্থনীতির মতোই বাংলাদেশের মোট দেশজ উত্পাদনের প্রবৃদ্ধি ২০২০ সালে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ হবে। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৪ শতাংশে উন্নীত হবে। প্রবৃদ্ধির এই ধারা ভারতকে টপকে যেতে সাহায্য করেছে। বাংলাদেশ যখন করোনার এই পরিস্থিতিতেও জিডিপিতে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছে, ভারত সেখানে গত চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন জিডিপি অর্জন করেছে। ভারতের মাথাপিছু জিডিপি ১০ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ১ হাজার ৮৭৭ ডলার হবে বলে জানিয়েছে আইএমএফ, যেখানে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি ১ হাজার ৮৮৮ ডলার।

১৯৭০ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ৪০ বছরে ভারত ছিল অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষ দেশ। চলতি মূল্যে ডলারের হিসাবে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ৭ শতাংশ। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা ছিল ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। আর পাকিস্তানে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ। পাঁচ বছর আগেও ভারতের মাথাপিছু জিডিপি বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় ৪০ শতাংশ বেশি ছিল। গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে ৯ দশমিক ১ শতাংশ হারে আর এই সময়ে ভারতে হয়েছে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। বাংলাদেশের উন্নয়নের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের অধিকাংশ সূচকে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ অনেক আগেই, এবার ছাড়িয়ে গেল এশিয়ার অন্যতম জায়ান্ট অর্থনীতির দেশ ভারতকেও। বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় নিঃসন্দেহে এ এক বিরাট অর্জন।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক উন্নয়নের যেকোনো সূচকের বিচারে গত দুই দশকে বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে অভূতপূর্ব। ১৯৯০-এর পর সার্বিকভাবে প্রবৃদ্ধিতে উন্নয়নশীল দেশের গড় হারের তুলনায় অনেক এগিয়েছে বাংলাদেশ। দারিদ্র্যের হার কমে অর্ধেক হয়ে গেছে। মেয়েদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অবদানের হার দ্রুত বেড়েছে। জনসংখ্যা, গড় আয়ু, শিশু মৃত্যুর হার, মেয়েদের স্কুলে পড়ার হার, সক্ষম দম্পতিদের জন্মনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণের হার ইত্যাদি সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ সমপর্যায়ের উন্নয়নশীল অন্যান্য দেশসহ ভারতকেও পেছনে ফেলতে সমর্থ হয়েছে। যে পাকিস্তানের হাত থেকে স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ, সেই পাকিস্তানিরা আজ বিস্মিত নয়নে তাকিয়ে দেখে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রার পেছনে সুদক্ষ কারিগরের ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন এ দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার শেষ ভরসাস্থল, জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের আজকের এই উন্নয়নের ভিত্তি গড়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর পাকিস্তানের ২৪ বছরের শোষণ এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন তাদের পোড়া মাটি নীতির ফলে ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামো ও অর্থনীতির ওপর দাঁড়িয়ে জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিলেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে তিনি বাংলাদেশকে বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেন। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে উঠে এসেছিল তার জীবদ্দশাতেই। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের অগ্রগতি থেমে যায়। পঁচাত্তর-পরবর্তী সরকারগুলোর জনবিচ্ছিন্নতা, লুটপাট ও দর্শনবিহীন রাষ্ট্র পরিচালনা বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাহীন রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সাল, দীর্ঘ এই ১৫ বছরে বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৩ দশমিক ২ শতাংশ, যা বর্তমানে তার প্রায় তিন গুণ। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ পরিচিতি পেয়েছিল ঝড়, জলোচ্ছ্বাস এবং ভিক্ষুক-দরিদ্র-হাড্ডিসার মানুষের দেশ হিসেবে। শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও উন্নয়নবান্ধব শাসননীতির ফলে সেই বাংলাদেশই আজ ‘মোস্ট এমাজিং ইকোনমি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্বে একটি সুপরিচিত নাম হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে আজ বাংলাদেশ। জিডিপি প্রবৃদ্ধির উচ্চ হার অর্জনের পাশাপাশি নানা সামাজিক সূচকে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছে আমাদের প্রিয় এই দেশ। দারিদ্র্যবিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু ও মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস, লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণ, শিক্ষার হার ও গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ তার দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশীদেরই শুধু নয়, অনেক উন্নত দেশকেও ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবার মান ও সহজপ্রাপ্যতার (এইচএকিউ) সূচকেও ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। বিশ্বের ১৯৫টি দেশের মধ্যে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৩তম। ভারতের ১৪৫তম। যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রভাবশালী জনস্বাস্থ্য ও চিকিত্সা সাময়িকী ল্যানসেট এক গবেষণায় এ তথ্য দিয়েছে। ভারতে প্রতি ১০ হাজার জন্মের মধ্যে নবজাতকের মৃত্যুর হার ২২ দশমিক ৭৩; বাংলাদেশে এই মৃত্যুহার ১৭ দশমিক ১২। বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর হার ২৫ দশমিক ১৪-এর তুলনায় ভারতে ২৯ দশমিক ৯৪। আমাদের পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুর মৃত্যুহার ৩৮ দশমিক ৬৯; তাদের ৩০ দশমিক ১৬। বাংলাদেশে ১৫ বছরের বেশি বয়েসের ৭১ শতাংশ নারী শিক্ষিত, ভারতে তা ৬৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী, পিপিপির ভিত্তিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থান ৩০তম। প্রাইস ওয়াটার হাউজ কুপারসের প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, ২০৪০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের অর্থনীতি বিশ্বে ২৩তম স্থান দখল করবে। এইচবিএসসির প্রক্ষেপণ বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের ২৬তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলছে, ২০২০-এ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ভারতসহ এশিয়ার দেশগুলো থেকে এগিয়ে থাকবে। বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উেক্ষপণ করেছে। পাবনার রূপপুরে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্রের নির্মাণকাজ এগিয়ে চলেছে। ভারতের সঙ্গে স্থলসীমানা চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ছিটমহল সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমানার বিরোধ মীমাংসার ফলে বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশির ওপর সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, খুলে গেছে নীল অর্থনীতির দ্বার। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন অর্জনের জন্য ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ নামে শতবর্ষের একটি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সঙ্গে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রাগুলো সম্পৃক্ত করে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজও শুরু হয়েছে।

বর্তমান সরকারের আমলে স্বাস্থ্য ও চিকিত্সা খাতে হয়েছে বড় উন্নতি। দেশ জুড়ে স্থাপিত ১৮ হাজার ৫০০ কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা আজ সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায়। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে সুযোগ-সুবিধা। স্থাপন করা হয়েছে হূদেরাগ, কিডনি, ক্যানসার, নিউরো, চক্ষু, বার্ন, নাক-কান-গলাসহ বিভিন্ন বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। তবে এখনো এদেশের অবস্থাপন্ন লোকজন ভারত, থাইল্যান্ড ও সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে সুুচিকিত্সার জন্য স্বদেশের লাখ লাখ বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করছে। এমতাবস্থায় স্বদেশের জেলায় জেলায় উন্নতমানের হাসপাতাল প্রয়োজন। অব্যাহত নার্সের চাহিদা মেটাতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে নার্সিং ইনস্টিটিউট। বিগত ১১ বছরে ২০ হাজার ১০২ জন নতুন চিকিত্সক এবং ২১ হাজার ৬৯৭ জন নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে একটি করে মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপনের কাজ চলছে। ১০ বছর আগের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশের মধ্যে বিরাট ব্যবধান। সাধারণ মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটেছে। ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে সর্বস্তরের মানুষের। দেশের পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে হয়েছে প্রভূত উন্নয়ন। প্রমত্তা পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মিত হবে আর সেই সেতু দিয়ে গাড়ি বা ট্রেনে সরাসরি পারাপার হতে পারবে—এটা ছিল মানুষের স্বপ্নেরও অতীত। শেখ হাসিনার উন্নয়নের সরকার সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে চলেছে। বৈদেশিক কোনো সহায়তা ছাড়াই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ এগিয়ে চলেছে। তিন ভাগের দুই ভাগেরও বেশি কাজ শেষ হয়ে গেছে এরই মধ্যে। পদ্মা সেতুর প্রায় অর্ধেক এখন দৃশ্যমান। রাজধানীর যানজট নিরসনে দেশের প্রথম মেট্রোরেল নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। পাতালরেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজও দ্রুত এগিয়ে চলেছে। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে দেশের প্রথম টানেল নির্মাণ করা হচ্ছে। এ সবই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির নির্দেশক। এসব দৃশ্যমান অবকাঠামো তৈরি হলে উন্নয়ন অধিকতর ত্বরান্বিত হবে। তবে অদৃশ্যমান অবকাঠামো, আইনকানুন, রীতিনীতি, প্রসেস-প্রসিডিওরের উন্নয়নও দরকার।

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক হুমকি ও মন্দা মোকাবিলা করে বিশ্বের অধিকাংশ দেশই যখন নিজেদের অর্থনীতি রক্ষায় সংকোচনমূলক নীতি গ্রহণ করছে, সেই সময়েও বাংলাদেশের জিডিপিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি অর্জন এদেশের অর্থনীতির সক্ষমতারই পরিচয় দেয়। করোনার এই সংকটকালেই বাংলাদেশ তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী বৃহত্ অর্থনীতির দেশ ভারতকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। সফলভাবে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলাসহ সার্বিক অর্থনীতির গতি ঠিক থাকার ফলে বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে বিশ্বে দ্বিতীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম স্থানে থাকবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। অথচ করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রভাবে এ বছর পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি না হয়ে সংকোচন হবে। বাংলাদেশের এ অবস্থান অর্থনীতির মনোবলকে আরো চাঙ্গা করবে। এদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় উন্নয়নের যে ধারায় এগিয়ে চলেছে দেশ, এই ধারা অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষ্যতে উন্নত বিশ্বের কাতারে নাম লেখাবে বাংলাদেশ—এ কথা নিঃসংকোচেই বলা যায়।

লেখক: পররাষ্ট্রমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

ইত্তেফাক/জেডএইচডি

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন