শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কিছু সংশোধনী এনে অর্থবিল পাস

আপডেট : ২৯ জুন ২০১৯, ২২:১৫

আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু সংশোধনী এনে অর্থবিল ২০১৯ শনিবার জাতীয় সংসদে পাশ হয়েছে। অর্থবিল ২০১৯ সংসদে পাশের জন্য অর্থমন্ত্রীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রী উপস্থাপন করেন। এর আগে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল শারীরিক অসুস্থতার কারণে অর্থবিল জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুমতি দিতে স্পিকারের কাছে আবেদন করেন। স্পিকার তাঁর আবেদন মঞ্জুর এবং প্রধানমন্ত্রীকে অর্থমন্ত্রীর পক্ষে বিল উপস্থাপনের অনুমতি দেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এটি ভোটে দেন এবং কণ্ঠভোটে অর্থবিল পাস হয়।

অর্থবিল পাশের আগে প্রধানমন্ত্রী কিছু সংশোধনী সুপারিশও তুলে ধরেন সংসদে। তিনি প্রস্তাব করেন যে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি যে পরিমাণ স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করবে, কমপক্ষে তার সমপরিমাণ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করতে হবে। যদি কোম্পানির ঘোষিত স্টক লভ্যাংশের পরিমাণ নগদ লভ্যাংশের চেয়ে বেশি হয়, তাহলে স্টক লভ্যাংশের ওপর ১০ শতাংশ হারে কর প্রস্তাব করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নগদ লভ্যাংশ উত্সাহিত করায় আমরা আরো প্রস্তাব করেছিলাম যে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ৫০ শতাংশের বেশি রিটেইন আর্নিং, রিজার্ভ থাকলে অতিরিক্ত রিটেইন আর্নিং, রিজার্ভের ওপর অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে। এ বিষয়েও ব্যবসায়ী উদ্যোক্তারা কেউ কেউ আপত্তি করেছেন। সেই প্রেক্ষাপটে এই ধারাটির আংশিক সংশোধন করে তিনি প্রস্তাব করেন, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানি কোনো অর্থবছরে কর পরবর্তী নিট লাভের সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ রিটেইন আর্নিং, ফান্ড, রিজার্ভে স্থানান্তর করতে পারবে। অর্থাত্ কমপক্ষে ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিতে হবে। যদি কোনো কোম্পানি এরূপ করতে ব্যর্থ হন তাহলে প্রতিবছরে রিটেইন আর্নিং, ফান্ড, রিজার্ভের মোট অর্থের ওপর ১০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী ভ্যাট নিয়েও কিছু সংশোধনের প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, ১৫ শতাংশের নিম্নহারের উপকরণ কর রেয়াত দেওয়ার সুযোগ না থাকায় ব্যবসায়ীরা হ্রাসকৃত হারের পরিবর্তে উপকরণ কর গ্রহণ করে ১৫ শতাংশ হারে কর প্রদানের সুযোগ সৃষ্টির দাবি করেছে। প্রধানমন্ত্রী হ্রাসকৃত হারের পাশাপাশি কেউ চাইলে যেন ১৫ শতাংশ কর দিয়ে রেয়াত পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারে আইনে সেই বিধান সংযোজনের প্রস্তাব করেন। দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনায় তাঁতশিল্পে ব্যবহূত সুতা শিল্পের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাটের বদলে প্রতি কেজি সুতায় ৪ টাকা হারে সুনির্দিষ্ট কর বসানোর প্রস্তাব করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরো বলেন, দেশীয় শিল্পের প্রতিরক্ষণ, প্রণোদনা প্রদানে প্রস্তাবিত বাজেটে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে শুল্কহার হ্রাস-বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে এর ফলে দেশীয় কাগজ ও গ্যাস উত্পাদনকারী শিল্পসহ অন্যান্য শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। দেশীয় মুদ্রণ শিল্পের প্রণোদনা প্রদান ও বন্ড ব্যবস্থার অপব্যবহার রোধকল্পে দেশে উত্পন্ন হয় না এমন পেপারগুলোর শুল্কহার যৌক্তিক করার কথাও বলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, নতুন অর্থবছর ২০১৯-২০ এর জন্য ১৩ জুন ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। এরপর সংসদে ২৭০ জন সদস্য এতে আলোচনায় অংশ নেন। অবশেষে গতকাল সংসদে বিলটি পাস করা হয়েছে। যা ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। আজ রবিবার সংসদে বাজেট পাস হওয়ার কথা রয়েছে।