শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

অর্থনীতির নোবেল আরেক বাঙালির

আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০১৯, ০০:২৫

ফের বাঙালির ঘরে এলো নোবেল। অমর্ত্য সেনের পর দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে অর্থনীতিতে এই সম্মানে ভূষিত হলেন কলকাতার সন্তান অভিজিত্ বিনায়ক ব্যানার্জি। সঙ্গে আছেন স্ত্রী এসথার ডুফলো এবং মার্কিন অর্থনীতিবিদ মাইকেল ক্রেমার। খবর বিবিসি, এনডিটিভি ও ইন্ডিয়া টাইমসের

দ্যা রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস বৈশ্বিক দারিদ্র বিমোচনে তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এই তিনজন অর্থনীতিবিদের গবেষণা দারিদ্রের সঙ্গে লড়াইয়ের সক্ষমতাকে আরো শক্তিশালী করেছে। একাডেমি বলেছে, মাত্র দুই দশকে তাদের গবেষণা পদ্ধতি উন্নয়ন অর্থনীতির রূপরেখা বদলে দিয়েছে। এখন অর্থনীতির গবেষণায় এটি অন্যতম পাথেয় মডেল। অভিজিত্ বিনায়ক ব্যানার্জি, এসথার ডুফলো এবং মাইকেল ক্রেমার তিনজনই অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন এবং বেশকিছু বইয়ের লেখক। যৌথভাবে নোবেল পাওয়ায় পুরষ্কারের অর্থ হিসেবে ৯০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার এখন তাদের মধ্যে সমবন্টন করা হবে।

কে এই অর্থনীতিবিদ অভিজিত্

বর্তমানে মার্কিন নাগরিক অভিজিত্ ব্যানার্জি জন্মগ্রহণ করেছেন ১৯৬১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। ১৯৮১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৩ সালে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। পরে ১৯৮৮ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন হার্ভার্ড থেকে। এখন কাজ করছেন ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি যা এমআইটি নামে বিশ্বে বহুলভাবে পরিচিত। সেখানে তিনি ফোর্ড ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল প্রফেসর হিসেবে অর্থনীতি পড়াচ্ছেন। ২০০৩ সালে তিনি এসথার ডুফলো ও সেন্ধিল মুল্লাইনাথানকে সঙ্গে নিয়ে আব্দুল লতিফ জামিল পোভার্টি অ্যাকশন ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেন। অন্যদিকে ফরাসি ও মার্কিন নাগরিক এসথার ডুফলো হলেন গত ৫০ বছরে দ্বিতীয় নারী যিনি অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন। এর আগে ২০০৯ সালে এলিনর ওস্ট্রাম নোবেল জিতেছিলেন। তবে অর্থনীতিতে নোবেল জয়ীদের মধ্যে ডুফলোই সর্বকনিষ্ঠ। ১৯৭২ সালে প্যারিসে জন্মগ্রহণ করা এসথার ডুফলো এখন এমআইটিতে কর্মরত। বিনায়ক ব্যানার্জি এসথার ডুফলোর স্বামী। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের পর ২০১৫ সালে ডুফলোর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন অভিজিত্।

প্রেসিডেন্সি কলেজেই পড়ার সময় অভিজিত্ বাঙালি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের ছাত্র ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ক্ষমতায় আসার পর প্রেসিডেন্সির জন্য যে মেন্টর গ্রুপ করেছিলেন, সেই গ্রুপের সদস্য ছিলেন অভিজিত্। ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছিলেন অমর্ত্য সেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেন ও মোহম্মদ ইউনূসের পর আরো এক বাঙালি পাচ্ছেন এই সর্বোচ্চ সম্মান। এদিকে মাইকেল ক্রেমার হার্ভার্ডের অর্থনীতি বিভাগে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। তিনি আমেরিকান একাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের ফেলো। ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের ইয়াং গ্লোবাল লিডারও মনোনীত হয়েছিলেন তিনি।

অমর্ত্য সেনের প্রতিক্রিয়া

বোস্টন থেকে পিটিআইয়ের সঙ্গে সাক্ষাত্কারে অর্মত্য সেন বলেন, ‘আমি খুবই খুশি এবং আনন্দিত যে অর্থনীতিতে অন্যদের সঙ্গে নোবেল পুরস্কার পাচ্ছেন অভিজিত্।’ তার মতে, সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তিকেই এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

এদিকে দম্পতিদের নোবেল পাওয়ার তালিকায় অভিজিত্ দম্পতি পঞ্চম স্থানে।

এর আগে মেরি কুরি-পিয়েরে কুরি, আইরিন কুরি-ফ্রেডরিক কুরি, গার্টি সোরি-কার্ল সোরি ও মে ব্রিট মোজার-অ্যাডভার্ড মোজার দম্পতি বিভিন্ন বিভাগে নোবেল পুরস্কার জিতেছেন।