সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের মূল অস্ত্র এখন পেস বোলাররা। বিশেষ করে ঘরের মাঠে গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিক সাফল্যের নেপথ্যে আছেন পেসাররা। ২০১৪ সালে মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বে আসার পর থেকেই পেসারদের এই উত্থান। রঙিন জার্সিতে এমন রমরমা সময় কাটানো পেস বোলাররাই সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ব্রাত্য। টেস্ট ক্রিকেটে দেশের মাটিতে একাদশেই জায়গা হয় না তাদের। সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে চট্টগ্রামে একজন খেললেও মিরপুর টেস্টে একাদশে ছিলেন না কোনো পেসার। পারফরম্যান্সের ঘাটতির সঙ্গে স্পিন নির্ভর উইকেটের কারণে সুযোগ পাচ্ছেন না দ্রুতগতির বোলাররা। ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে দুই টেস্টে ৪০ উইকেটই নিয়েছেন স্পিনাররা।
আগামী ৯ ডিসেম্বর শুরু হবে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। বাংলাদেশ জাতীয় দলের পেসার রুবেল হোসেন বলেছেন, ওয়ানডে সিরিজে দাপট দেখাবে পেস বোলাররা। দলকে সিরিজটা জেতানোর ক্ষমতা রাখেন পেসাররা। ওয়ানডেতে উইকেটও স্পিন সহায়ক থাকবে না বলেই ধারণা করছেন রুবেল।
মিরপুর স্টেডিয়ামে গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল। অনুশীলনের পর রুবেল বলেছেন, পেসাররা ওয়ানডে সিরিজ জেতানোর ক্ষমতা রাখে। তিনি বলেছেন, ‘অবশ্যই ক্ষমতা রাখে এবং ওয়ানডে জিতিয়েছেও পেস বোলাররা, আপনি যদি দেখেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও। এই কন্ডিশনেও অবশ্যই জিতাইতে পারবে, ওয়ানডেতে উইকেট স্পিন সহায়ক থাকবে না, যেভাবে টেস্টে ছিল। আর আমাদের যে পেস বোলাররা আছে, এই কন্ডিশনে সব ম্যাচ জেতাতে পারবো।’
টেস্টে স্পিনারদের দাপট, ওয়ানডেতে পেসারদের রাজত্ব এখন বাংলাদেশ দলে। এই কৌশলে খারাপ কিছু দেখছেন না রুবেল। ডানহাতি এই পেসার গতকাল বলেছেন, ‘আসলে আমাদের টেস্ট ক্রিকেটে সবসময় স্পিনাররাই রাজত্ব করে আসছে। আর পেস বোলাররা আমরা সবসময় ওইরকম সাফল্য পাচ্ছি না। আর ওয়ানডে ফরম্যাটটা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা ফরম্যাট। একদিনের খেলা, যারা যেদিন যত ভুল কম করবে তারা তত ভালো খেলে। এটা পরিবর্তন করার কিছু নাই। টেস্ট আর ওয়ানডেতে যেভাবে খেলে আসছি আমার কাছে মনে হয় ঠিকই আছে।’
গত জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে ৩-০ সম্ভব কিনা জানতে চাইলে রুবেল বলেছেন, ‘আসলে এটা তো বলা যাচ্ছে না। আমরা অবশ্যই সিরিজ জেতার জন্য মাঠে নামবো। ৩-০ বা ২-০ এ ধরনের কোনো কিছুই বলা যাচ্ছে না। আমাদের প্রতিটা প্লেয়ার খুব আত্মবিশ্বাসী আছে। ভালো একটা টেস্ট সিরিজ আমরা জিতেছি, এটা আমাদের প্লেয়ারদের অনেক আত্মবিশ্বাস দিবে।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের পর এশিয়া কাপেও বল হাতে ভালো সময় কেটেছে রুবেলের। ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে আসন্ন সিরিজে নিজের সেরাটা দিতে চান এই অভিজ্ঞ পেসার। অনুশীলনে ডেথ ওভারের বোলিংয়ে অনেক গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নয় বছরের অভিজ্ঞতা সেখানে আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে রুবেলকে।
ডেথ ওভারের বোলিং নিয়ে গতকাল ২৮ বছর বয়সী এই পেসার বলেছেন, ‘আমি নয় বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছি, অবশ্যই একটু অভিজ্ঞতা হয়েছে। তারপর অনেক কষ্ট করছি ডেথ ওভারের বোলিং নিয়ে। কারণ আমার মূল শক্তি হচ্ছে আমার ডেথ বোলিং। কারণ আমাকে ডেথে বল করতেই হবে। এমন অবস্থানে বল করি যেখানে ম্যাচ জেতানোও যায় আবার ম্যাচ হেরেও যায়। যার কারণে আমাকে আরও বেশি ফোকাস রাখতে হয়। এখন একটু বেশি জোর দিচ্ছি ডেথ বোলিংয়ে।’