১১ দফা দাবি নিয়ে খেলা বন্ধ করার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছিলেন। স্তব্ধ ও বিস্মিত হয়ে গিয়েছিল ক্রিকেটাঙ্গন। সেই ঘটনার পর থেকে এক বছর পার হয়ে এসে কিছু দাবি পূরণ হয়েছে, কিছু একেবারেই গুরুত্ব পায়নি। কিন্তু সেই আন্দোলন নিয়ে এই সময়ে এসে একেবারেই নীরব ক্রিকেটাররা। তারা আর মুখ খুলতেই রাজি নন এ বিষয়ে। তবে কেউ কথা বলতে না চাইলেও অন্যতম শীর্ষ তারকা এনামুল হক জুনিয়র বললেন, তারা নিজেদের মধ্যে এগুলো নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
গত বছর অক্টোবরে রীতিমতো সংবাদ মাধ্যমকে ডেকে দারুণ সমন্বয়ের মাধ্যমে ১১টি দাবি পেশ করেছিলেন ক্রিকেটাররা। একেক জন ক্রিকেটার একেকটা দাবি পড়ে শুনিয়েছিলেন। সেসব দাবির মধ্যে ছিল প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের বেতন-ভাতা বাড়ানো, যাতায়াত, থাকা-খাওয়ার মান বাড়ানো থেকে শুরু করে মাঠকর্মী, আম্পায়ারদের সুযোগ বাড়ানোর কথাও। ছিল ক্রিকেটারদের সংগঠনকে ক্রিকেটারদের হাতেই ছেড়ে দেওয়ার দাবি।
শুরুতে হতচকিত হয়ে গেলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) দ্রুত কিছু দাবি মেনে নেয়। বাড়ানো হয় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা। কিন্তু বিভাগে বিভাগে জিমনেসিয়াম তৈরি করা বা গ্রাউন্ডসম্যানদের সুবিধা বাড়ানোর মতো ব্যাপারগুলো সেভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। কেন্দ্রীয় চুক্তিতে বাড়ানো হয়নি ক্রিকেটারের সংখ্যা। এদিকে ক্রিকেটারদের সংগঠন আগের মতোই চলছে।
আরও পড়ুন: দলটাকে ভালো ম্যাচের জন্য তৈরি করতে চান জেমি
এর মধ্যে এক বছর পেরিয়ে গেলেও সেই আন্দোলনে যারা সামনে ছিলেন, তাদের প্রতিক্রিয়া আর পাওয়া গেল না। কয়েক জন শীর্ষ ক্রিকেটারের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কেউ কথা বলতে রাজি হলেন না। আবার সামনে ছিলেন না, এমন কয়েক জন ক্রিকেটার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বললেন, তারা এই আন্দোলনের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন।
এমন এক প্রান্তিক ক্রিকেটার বলছিলেন, ‘আমাদের জন্য তো সেরকম কিছু হলোই না। কী দাবি পূরণ হয়েছে, তা তো বলতে পারবে সে সময় যারা সামনে ছিল, সেই ক্রিকেটাররা। একটা ব্যাপার বলতে পারি, এ নিয়ে এখন আর আমাদের সঙ্গে কেউ আলাপ করে না।’
এই অসন্তোষটা নতুন নয়। দাবি-দাওয়া দেওয়ার পর বিসিবির সঙ্গে খেলোয়াড়দের বৈঠকের পরই কয়েক জন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার বলেছিলেন, তাদের সামনে রেখে আন্দোলনটা করা হলেও তাদের কথা সেভাবে কেউ ভাবেনি।
তবে এসব কথার বিপরীতে বললেন এনামুল হক জুনিয়র। তিনি বললেন, শীর্ষ সব ক্রিকেটারই নিজেদের মধ্যে এই দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলছেন। আলোচনা চলছে। তারা পরিস্থিতি দেখছেন, ‘লক ডাউনের মধ্যেও অনেকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। জাতীয় দলের ওরাও ব্যাপারগুলো নিয়ে এখনো ভাবছে এবং করণীয় নিয়ে কথা বলছে। আমরা পরিস্থিতি দেখছি।’
ইত্তেফাক/এএএম