জরুরি সুচিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় আবারো নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে রাশিয়ান নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া এই ব্যক্তির নাম শেরগিন ভ্যাইলি (৫৯)। তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের রাশিয়ার ঠিকাদারি ‘রোসেম’ নামের প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন বলে জানা গেছে।
প্রকল্পের নতুনহাট মোড়ে নির্মাণাধীন গ্রিন সিটির একটি কক্ষে ভ্যাইলি থাকতেন। জানা যায়, শুক্রবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে গ্রিন সিটির ১ নম্বর ভবনের ৫১ নম্বর কক্ষের বাথরুমের ভেতরে তাঁকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। বাথরুমের দরোজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। পরে দরোজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু আগেই ভ্যাইলির হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
সূত্র জানায়, এ সময় গ্রিন সিটির মেডিকেল কো-অর্ডিনেটর ডাঃ ফকরুলকে খবর দেওয়া হলে তিনি এসে পরীক্ষা করে জানান, আগেই ভ্যাইলির মৃত্যু হয়েছে। ভ্যাইলি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে তিনি ধারণা করছেন।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ বাহাউদ্দিন ফারুকী জানান, ‘শেরগিন ভ্যাইলি রোসেম কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। তিনি রূপপুর প্রকল্পের সাব-ঠিকাদার রোসেম কোম্পানিতে রাশিয়া হতে বাংলাদেশে এসে প্রকল্পের ইন্সটলার পদে কাজ করতেন।
উল্লেখ্য, প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৬-৭ জন রাশিযান নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিযেছে। স্থানীয়রা জানান, বেশীরভাগ মৃত্যু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ঘটলেও মুলত অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণেই হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে কর্মরতদের জন্য জরুরি চিকিৎসা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কথা রয়েছে। কবে নাগাদ এই কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা হবে তা জানা যায়নি। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রকল্পে ১৩শ হতে ১৪শ রাশিয়ান কর্মরত রয়েছে। এ সকল বিদেশিরা অসুস্থ হলে প্রকল্প এলাকা হতে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরের ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসতে হয়। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি ভিত্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ রোগির সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। ঝুঁকিপূর্ণ রোগিকে রাজশাহী বা অন্যত্র পাঠানো হয়। এসব রোগি পথিমধ্যেই মৃত্যুবরণ করে।
রাশিয়ানদের পক্ষ হতে ডাঃ ফখরুল ইসলাম নামে একজন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া আছে বলে জানা গেছে। তাছাড়া ঈশ্বরদীতে উন্নতমানের বেসরকারি কোন হাসপাতাল বা ক্লিনিক না থাকায় বিদেশিরা সুচিকিৎসা প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ কানাডায় পিতা-মাতা স্পন্সরের শুরু ২৮ জানুয়ারি
উল্লেখ্য, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে কর্মরত রাশিয়ান ছাড়াও ইপিজেড এবং ঈশ্বরদীর অন্য প্রতিষ্ঠানেও বেশ কিছু বিদেশি নাগরিক কর্মরত।
ইত্তেফাক/নূহু