শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

জামালপুরে ভারতীয় সীমান্তে বন্য হাতি আতংক

আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৪:২৩

জামালপুর জেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় আবারও হাতির উপদ্রুপ বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে প্রায় অর্ধ শতাধিক বন্য হাতির একটি দল জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার কামালপুর ইউনিয়নের সোমনাথপাড়া সীমান্ত দিয়ে প্রায় ১ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। গত রবিবার থেকে বন্য হাতির দলটি ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করছিল। এসব হাতি খাদ্যের সন্ধানে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবশেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রবেশ করে। 

ফলে বন্যহাতির প্রবেশের কারণে বকশীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী কামালপুর ইউনিয়নের সোমনাথপাড়া, গাঢ়োপাড়া, টিলাপাড়া, যদুরচর, সাতানীপাড়া ও মীর্ধাপাড়াসহ ৬ গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নির্ঘুম রাত যাপনসহ হাতি আতংকে ভোগছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসীরা জানান, ওইদিন বিকালে ভারতীয় বন্য হাতির দলটি সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের লোকালয়ে প্রবেশ করে। এদিকে হাতির তাণ্ডব ঠেকাতে স্থানীয় লোকজন পূর্ব প্রস্তুতি না থাকায় তারা জেনারেটর এর মাধ্যমে আলোক সজ্জা করে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করেন। কিন্ত তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হওয়ায় হাতি তাড়ানো সম্ভব হয়নি। 

আরও পড়ুন : খালেদের টর্চার সেলে নির্যাতনের সরঞ্জাম

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হাসেম, রব্বানী আবু তালেব জানান, প্রতি বছর বন্য হাতি অক্টোবর মাসের শেষের দিকে রোপা আমন কাটার সময় খাদ্যের সন্ধানে বাংলাদেশে প্রবেশ করে  থাকে। কিন্তু এবার অনেক আগেই হাতির দল বাংলাদেশে এসেছে। এদিকের স্থানীয় কৃষকরা তাদের ঘরবাড়ি-ফসল রক্ষার জন্য আগুন জ্বালিয়ে কেউ টিনের ডেন্ডারা পিটাচ্ছেন শব্দ করে। আবার অনেকেই জমির ফসলের চারিদিকে বিদ্যুতের তার দিয়ে ঘেরাও করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব বিদ্যুতের তারে এক পার্শ্বে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়। ফলে ওসব বিদ্যুতের তারের সংস্পর্শ পেলেই হাতির দল পালিয়ে যায়। 

এ বিষয়ে জামালপুর বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ৩৫ ব্যাটিলিয়নের কমান্ডিং অফিসার (সিও) লে. কর্ণেল এসএম আজাদ জানান, বন্য হাতির প্রবেশের কারণে সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষার্থে বিজিবি সদস্যদের টহল জোরদার করা হয়েছে। 

এ ব্যাপারে বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) তাহের উদ্দিন বলেন, হাতি বাংলাদেশে এসেছে শুনে সাব-ইন্সপেক্টর শরীফ উদ্দিনের সঙ্গিয় পুলিশ সদস্য দিয়ে কামালপুর ইউনিয়নের এলাকায় পাঠিয়েছি। হাতির সন্ধান পেলে আমাদেরকে তারা জানাবে।

বকশীগঞ্জ থানার সাব-ইন্সপেক্টর শরীফ উদ্দিন কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি রাত ৮ টার দিকে ফোর্স বাহিনী নিয়ে টহলে এসেছি। আমি শুনেছি হাতি আসছে। কিন্তু আমার নজরে এখনো পড়ে নাই। আমি দেখছি এলাকার মানুষ সবাই আতংকের মধ্যে নির্ঘুম অবস্থায় রয়েছেন। 

এ বিষয়ে জামালপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এনামুল হক তিনি জানান, বন্য হাতি আসার খবর পেয়ে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে হাতি উপদ্রুপ এলাকায় জেনারেটর ও বৈদ্যুতিক বাতি সরবরাহ করার নির্দেশ দিয়েছি। যাতে জনসাধারণের জানমালের রক্ষা হয়।

ইত্তেফাক/কেআই