শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

হুইস্কি পান করিয়ে তরুণীকে গণধর্ষণ!

আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০১৯, ২০:২১

ছক কষা ছিল আগেই। সেই মোতাবেক বুধবার রাতে ধর্ষণের আগে জোর করে তরুণীকে হুইস্কি পান করায় অপরাধীরা। ফলে ধর্ষণের সময় বাধা দেওয়ার কোন ক্ষমতাই ছিল না অসহায় ওই তরুণীর। সদ্য ভারতের তেলেঙ্গানায় ঘটে যাওয়া পশু চিকিৎসক ধর্ষণের তদন্তে নেমে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে সেখানকার প্রশাসন। খবর এনডিটিভির।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অঘটনের দিন সন্ধ্যায় একটি টোল প্লাজার সামনে স্কুটির টায়ার পাংচার হয়ে গিয়েছিল ২৬ বছর বয়সী ওই পশু চিকিৎসকের। তখনই সেই টায়ার সারিয়ে দেয়ার অজুহাতে তার কাছে আসে  আরিফ, জলু শিভা, জলু নবীন ও চিন্তাকুন্তা চেন্নাকেসাভুলু নামের চার ব্যক্তি। ঘড়িতে তখন রাত ৯ টা বেজে ১৫ মিনিট। পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে গণধর্ষণ করে জ্যান্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ওই চিকিৎসককে। নিজের দূরবস্থার কথা জানিয়ে ৯ টা ২২ মিনিটে বোনকে শেষ ফোন করেছিলেন তিনি। এরপরই নিষ্ঠুর পৃথিবী থেকে তিনি চিরবিদায় নেন হতভাগা তরুণী।  

পুলিশের জানায়, চার অপরাধীই নারায়ণপোতের বাসিন্দা। এলাকাটি হায়দ্রাবাদ থেকে ১৬০ কিমি দূরে। ধর্ষকরা লরি চালক ও খালাসি হিসেবে কাজ করত। প্রত্যেকের বয়স ২০-২৬ বছরের মধ্যে। ঘটনার পর এফআইআর নিতে অস্বীকার করার অভিযোগে তিন পুলিশকর্মীকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে এ ঘটনায় গণবিক্ষোভ শুরু হলে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তাদের গ্রেফতার করে তেলেঙ্গানা পুলিশ। ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে তাদের বিচার হতে পারে।   

আরও পড়ুন: মি টু'র ফাঁদে তিউনিশিয়ান এমপি!

অভিযুক্তদের বয়ান অনুযায়ী, আনুমানিক সন্ধ্যা সোয়া  ৬ টায় স্কুটি পার্কিং লটে গাড়ি রেখে ট্যাক্সি ধরে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যান ওই তরুণী। তখনই তার স্কুটির একটি চাকা পাংচার করে দেয় অপরাধীদের একজন। আনুমানিক সোয়া ৯ টায় পশু চিকিৎসক পার্কিং লটে ফিরে দেখেন তার স্কুটির টায়ার পাংচার হয়ে গেছে। তিনি কাউকে ডাকার আগেই তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে ওই চার অপরাধী। পরে তারা জোর করে তরুণীকে টেনে নিয়ে যায় পাশের ঝোপে। অসহায় তরুণীটি বাঁচার জন্য চিৎকার করতে থাকলে তাকে থামাতে এবং বেহুঁশ করতে জোর করে মুখে হুইস্কি ঢালে তারা। ধর্ষণের আগে নিজেরাও হুইস্কি খেয়েছিল বলে স্বীকার করে তারা।

এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন অনেক রাজনীতিবিদ। শনিবার কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি টুইট করেন, 'কীভাবে কেউ এইরকম ভয়ঙ্কর হিংসার শিকার হতে পারেন তা কল্পনার বাইরে। আমার সহমর্মিতা মৃত তরুণীর পরিবারের প্রতি।' একইদিন নিগৃহীতার হায়দ্রাবাদের বাসভবনে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন তেলেঙ্গানা রাজ্যপাল তামিলিসই সৌন্দরারাজন। এর আগে জাতীয় মহিলা কমিশনের একটি দলও মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন।

ইত্তেফাক/এসএইচএম