বৃহস্পতিবার, ০৮ জুন ২০২৩, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

কুয়েট শিক্ষকের মরদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের আবেদন

আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০৫:১৫

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় মানুষের মধ্যে সন্দেহ ও নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হওয়ায় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে পুলিশ প্রশাসন। ইতিমধ্যে খানজাহান আলী থানার পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) এবং কবর থেকে মরদেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। পুলিশ বলছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশের পর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। অন্যদিকে শিক্ষক সেলিম হোসেনের স্ত্রী সাবিনা খাতুন রিক্তা বলেছেন, মরদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের বিষয়ে তাকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কিছু জানানো হয়নি।

খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস জানান, কুয়েটের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে সন্দেহ ও নানা গুঞ্জন সৃষ্টি হওয়ায় বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এসেছে। ফলে গত শনিবার উক্ত ঘটনায় খানজাহান আলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এছাড়া গত রবিবার পুলিশের পক্ষ থেকে কবর থেকে মরদেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে, কিন্তু আদালত আবেদনটি আমলে নেয়নি। 

তবে শিক্ষক সেলিমের মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য ও ব্যাপক গুঞ্জন সৃষ্টি হওয়ায় বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আওতায় (নজরে) রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশের পর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তবে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি, যে কারণে আদালত মরদেহ কবর থেকে তোলার অনুমতি দেয়নি। আদালত থেকে জানানো হয়, বিষয়টি জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের এক্তিয়ারভুক্ত। এজন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদনের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর খুলনা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। মরদেহ যেহেতু কুষ্টিয়ায় দাফন করা হয়েছে, তাই খুলনার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনটি কুষ্টিয়ার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠাবেন।

এদিকে অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের স্ত্রী সাবিনা খাতুন রিক্তা বলেন, ‘কবর থেকে মরদেহ তুলে ময়নাতদন্তের বিষয়ে আমাকে প্রশাসন এখনো কিছু জানায়নি। আমি এখন কুয়েট প্রশাসনের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছি, কিন্তু এ বিষয়ে তাদের কোনো আগ্রহ দেখছি না। এখন কুয়েট প্রশাসন মামলা না করলে আমি মামলা করব।’
কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রতীক চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির মামলা করার কোনো অধিকার নেই। প্রশাসন নানা রকম পদক্ষেপ নিচ্ছে, আমরা সেটাকে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। আমরা শুধু বলতে পারি,  শিক্ষক সমিতির যে দাবিগুলো ছিল, তা আদায়ে আমরা অনড় রয়েছি। আমাদের আন্দোলন চলবে।’
এদিকে শিক্ষক সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ ৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া পাঁচ সদস্যের নতুন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

ইত্তেফাক/এসএ