সাভারে যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় এক গৃহবধূকে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা ও গরম পানি দিয়ে শরীর ঝলসে দেওয়ার অভিযোগে ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোর রাতে সাভার পৌর এলাকার গেন্ডা মহল্লায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গত শনিবার বিকেলে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদ হাসান।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- ভুক্তভোগীর শ্বশুর নজরুল ইসলাম (৫০) ও শাশুড়ি খুরশিদা বেগম খুশি (৪০)। মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন ভুক্তভোগীর স্বামী জহিরুল ইসলাম সাগর (২৫), সাগরের মামাতো ভাই নিরব হোসেন শাওন (২৬), সাইফুল ইসলাম (৩৫) ও জুলহাস (৩০)।
নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগী জানান, প্রায় ২ বছর আগে সাগর ও তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে সাগর বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে সে সাগরের বাড়িতে বিয়ের জন্য অনশন করেন। এসময় বাধ্য হয়ে সাগর ভুক্তভোগীকে বিয়ে করলেও এরপর থেকেই তার ওপর চলে অমানবিক নির্যাতন। পরিবারের সকলেই তার ওপর নির্যাতন চালাতেন বলে দাবি ভুক্তভোগীর। ভুক্তভোগী নিজের পরিবারের অমতে বিয়ে করায় পরিবারের সাথেও তেমন যোগাযোগ ছিল না তার। তবুও স্বামীর চাপে অনেক কষ্টে মায়ের কাছ থেকে কিছু টাকা যৌতুক এনে দেন। পরে স্বামীর সাথে ধামরাইয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে পোশাক কারখানায় কাজ নেয় ভুক্তভোগী। তার পরেও চলে নির্যাতন। সর্বশেষ ১৩ই ডিসেম্বর ভুক্তভোগীকে কৌঁশলে মোবাইল ফোনে নামা গেন্ডা এলাকার বাড়িতে ডেকে নেয় জহিরুল। গাড়ি থেকে নামতেই তার চোখ বেঁধে শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে পরিবারের সকলে মিলে তার উপর নির্যাতন করে। একপর্যায়ে তাকে মারধর করে মুখে বিষ দেয়াসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জ্বলন্ত সিগারেটের ছ্যাঁকা ও গরম পানি শরীরে ঢেলে দেয়। এসময় অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে নির্যাতনকারীদের ধাক্কা দিয়ে দৌড় দিয়ে এসে উঠানে পড়ে যান তিনি। সেখান থেকে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসা শেষে শনিবার মামলা দায়ের করলে দুই জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহিদ হাসান জানান, গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। ইত্তেফাক/এমএএম