বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বিলুপ্তির পথে পারকি সৈকতের ঝাউবন

আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২১, ০৪:৫৫

সৈকত থেকে বালু উত্তোলনসহ নানা কারণে বিলুপ্তির পথে পারকি সৈকতের ঝাউবন। বছর দশেক আগেও যেখানে হাজার হাজার ঝাউগাছ দাঁড়িয়ে ছিল সেখানে আজ নামমাত্রে কিছু গাছের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। যা আছে তাও বিলুপ্তির মুখে। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, বন বিভাগের গাফলতি, সৈকত ব্যবস্হাপনা কমিটির অব্যবস্হাপনা, সৈকত থেকে অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে ঝাউবন ক্রমেই হারিয়ে যাচ্ছে। দ্রুতই সুরক্ষার উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে এক সময় সৈকতে ঝাউগাছের আর অস্তিত্বই থাকবে না। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, যে ঝাউ গাছগুলোকে কেন্দ্র করে এই সৈকত গড়ে উঠেছে সেই ঝাউগাছগুলোর অস্তিত্ব বিলীনের পথে। সৈকতের দক্ষিণ অংশের অধিকাংশ ঝাউগাছ শিকড় থেকে মাটি সরে গিয়ে হেলে পড়ছে। এক সময় সৈকতের বালিতে হাঁটা দুষ্কর ছিল। এখন সেই সৈকতে কাঁদা মাটি ছাড়া বালির লেশমাত্র দেখা যায় না। সৈকতের দক্ষিণ পাশে সমুদ্র থেকে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, পর্যটকদের অবহেলা ও সমুদ্র থেকে বালু উত্তোলনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাগর পাড়ের উদ্ভিদ ও সাগরের জীব বৈচিত্র্য। জরুরি ভিত্তিতে সৈকত থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ এবং সৈকতের সৌন্দর্য বর্ধনকারী ঝাউবাগান সংরক্ষণের দায়িত্ব না নিলে উপকূলীয় এলাকা ও সৈকত বিপন্ন হতে পারে। 

শহিদুল ইসলাম নামের এক পর্যটক বলেন, আট বছর পর দেশে আসলাম। প্রবাসে যাওয়ার আগে সারি সারি যে ঝাউগাছগুলো দেখেছিলাম এখন তার ২০ শতাংশও নাই। হয়তো আগামী বার দেশে আসতে আসতে ঝাউগাছের অস্তিত্বও থাকবে না এখানে। 

বাংলাদেশ পরিবেশ উন্নয়ন সোসাইটির (বাপউস) সভাপতি এ কে এম আবু ইউছুফ বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে ওঠা পর্যটন এলাকাগুলো আমাদের সম্পদ। এর ব্যবহারে আমাদের সর্বোচ্চ সচেতন হতে হবে। কোনোভাবে যাতে পরিবেশ দূষণ না হয় সে ব্যাপারে পর্যটকদের সতর্ক থাকতে হবে। অন্যথায় পরিবেশ দূষণের ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপর্যস্ত হবে। ফলে উপকূলীয় এলাকার আবহাওয়ার বিরূপ আচরণ ও জলবায়ু পরিবর্তনে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।

এ বিষয়ে পারকি বীচ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমি বন বিভাগে অবহিত করব। কীভাবে এই ঝাউগাছগুলোকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা যায় সে বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করব। 

উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুর রহমান বলেন, ঝাউগাছের শিকড় থেকে বালি সরে গেলে গাছ উপড়ে পড়ে যায়। প্রাকৃতিক কারণে এমনটা হচ্ছে। সৈকত থেকে অবৈধ বা বৈধভাবে বালু উত্তোলন করার অনুমতি দেওয়া আমি উচিত মনে করি না। সৈকতের ঝাউবাগান রক্ষায় সরেজমিনে পরিদর্শন করে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করব।

ইত্তেফাক/ ইআ