কুমিল্লায় নারীদের দিয়ে কৌশলে জিম্মি করে র্যাব পরিচয়ে অনৈতিক কাজের ছবি তোলে ও ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়কারী প্রতারক চক্রের তিন নারীসহ ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার (১০ জানুয়ারি) গভীর রাতে র্যাবের একটি দল জেলার আদর্শ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করে।
গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- কুমিল্লা নগরীর দক্ষিণ চর্থা এলাকার মৃত শাহজাহান মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩৫), দিশাবন্দ এলাকার সাহেব আলীর ছেলে জুম্মন মিয়া (২৫), জেলার চান্দিনা উপজেলার অম্বলপুর গ্রামের মৃত আলী আজগরের মেয়ে জ্যোসনা আক্তার (২৫), আদর্শ সদর উপজেলার আড়াইউড়া গ্রামের মুছা মিয়ার মেয়ে হাসি আক্তার (২৪) ও তার ছোট বোন মিন্নি আক্তার (১৮)। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে র্যাবের একটি জ্যাকেট উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে এক প্রেসব্রিফিংয়ে র্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লা ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
র্যাব জানায়, একটি প্রতারক চক্র র্যাবের পরিচয়ে এক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযানে মাঠে নামে র্যাবের দল। সোমবার রাতে আদর্শ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের তিনজন নারীসহ ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে র্যাব আরও জানায়, প্রতারক চক্রের জুম্মন মিয়া একজন মাছ ব্যবসায়ী। সে মাছ ব্যবসার সুবাদে বিভিন্ন পেশার মানুষের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতো। পরে ধর্নাঢ্য ব্যক্তিদের টার্গেট করে নারীর প্রলোভন দেখাতো ও নারীদের সরবরাহ করতো। প্রতারক চক্রের নারী সদস্য ও ভুক্তভোগী পুরুষকে সুবিধামতো ঘরে একান্তে সময় উপভোগ করার ব্যবস্থা করে দিতো। ঠিক তখনি প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের নিয়ে উপস্থিত হয়ে অনৈতিক কাজের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে নিজেদেরকে র্যাবের পরিচয় দিত এবং ভুক্তভোগী পুরুষের সাথে থাকা নগদ অর্থ ও মোবাইল ছিনিয়ে নিত। পরবর্তীতে ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া ও মামলার ভয় দেখিয়ে ধাপে ধাপে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো। তারা বিভিন্ন সময়ে র্যাবের কুমিল্লা ক্যাম্পের অফিসের বাইরে সেলফি তুলে সেগুলো ভুক্তভোগীদের প্রেরণ করতো এবং ভুক্তভোগীদের নিকট নিজেকে র্যাব হিসেবে বিশ্বাস স্থাপন করাতো। ভুক্তভোগীরা র্যাব অফিসের ভিতরে টাকা প্রদান করতে চাইলে র্যাবের অপর সদস্যরা জেনে যাবে এবং চার-পাঁচগুণ টাকা বেশী দিতে হবে বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতো। ভুক্তভোগীরা সামাজিক লাজ-লজ্জা ও মান সম্মানের ভয়ে বিষয়টি অন্য কারো সাথে শেয়ার করতে পারতো না এবং বাধ্য হয়েই তাদেরকে টাকা প্রদান করতো।
র্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লা ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে র্যাবের একটি জ্যাকেট উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা হয়েছে।