শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৫ আষাঢ় ১৪৩২
The Daily Ittefaq

একদিনের ছুটি নিয়ে ৬ বছর উধাও দুই চিকিৎসক

আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬:৩২

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দু’জন চিকিৎসক একদিনের ছুটি নিয়ে ৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার জন্য একাধিকবার চিঠি দিলেও  তারা যোগ দেননি। এদিকে পদ দু’টি দীর্ঘ ৬ বছরেও শূন্য ঘোষণা করা হয়নি।  উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সূত্রে জানা গেছে, প্রতি মাসের ৫-৬ তারিখে জনবল পরিস্থিতির তালিকা করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠানো হয়। ওই প্রতিবেদন প্রতিমাসে দু’জন চিকিৎসক অনুপস্থিত থাকার বিষয়টিও জানানো হয়। কিন্তু প্রতিমাসে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠানো হলেও দীর্ঘ ৬ বছর গুরুত্বপূর্ণ পদ দুটিতে নতুন করে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। 

সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৩ জুলাই থেকে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থো.) আবুল কাশেম মহি উদ্দিন ও একই বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে সাইচা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিক্যাল অফিসার কাজী সামসুদ্দোহা অনুপস্থিত রয়েছেন। তবে দু’জন ওই সময় থেকে কোনো
 বেতন-ভাতাও তোলেননি।  কর্তৃপক্ষের ধারণা, তারা দু’জনই দেশের বাইরে রয়েছেন।

সূত্র জানায়, আবুল কাশেম মহিউদ্দিন ২০১৫ সালে ৬ এপ্রিল অর্থোপেডিক চিকিৎসক হিসেবে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগ দেন। আর ২০১৪ সালে ২০ নভেম্বর মাসে সাইচা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে কাজী সামছুদোহা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেন। পরে পারিবারিক কারণ দেখিয়ে একদিনের ছুটি নিয়ে তারা এখন পর্যন্ত কর্মস্থলে ফেরেননি। কর্তৃপক্ষ এ দুই ডাক্তারের স্থায়ী ঠিকানায় একাধিকবার চিঠিও পাঠিয়েছে। কিন্তু সব চিঠিই প্রেরককে না পেয়ে ফেরত এসেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রায়পুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক চিকিৎসক বলেন, ‘যেসব চিকিৎসক আইন ভঙ্গ করে অনুপস্থিত থাকছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। কারণ তাদের যোগাযোগ খুবই ‘উচ্চপর্যায়ে’। কোনো ব্যবস্থা নিতে গেলেই তদবির আসে। কিন্তু সেই চিকিৎসকদের দেখা মেলে না।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘কাজী সামসুদ্দোহা ও আবুল কাশেম মহিউদ্দিনের অনুপস্থিতির বিষয়টি প্রতিমাসে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পদ দু’টি শূন্য না হওয়ায় নতুন কাউকে পদায়ন করা হয়নি। অনুপস্থিত ওই দু’জন চিকিৎসককে কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার জন্য একাধিকবার নোটিশ পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তাদের কোনো খোঁজ-খবর পাওয়া যায়নি। তবে তারা দু’জন আমেরিকা রয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।’

ইত্তেফাক/এসজেড