রিয়াজের বয়স এখন ১৭ বছর। উচ্চতা ৩ ফুট ২ ইঞ্চি। মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে রিয়াজ এখন কলেজ শিক্ষার্থী। ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার চৌদার উত্তর পাড়া গ্রামের রাজমিস্ত্রী এনামুল হকের ছেলে রিয়াজ।
জানা যায়, ছোটবেলায় রিয়াজ ও তিন মাসের মেয়ে সোনিয়াকে রেখে মারা যান রিয়াজের মা। মায়ের মৃত্যুর পর দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিল রিয়াজ। তবে তার নানা-নানীর সেবায় সুস্থ হয়ে উঠেন। এরপর মাত্র ৭ বছর বয়সে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রিয়াজকে ভর্তি করে দেন তার নানা নজরুল ইসলাম (৬৫)। প্রাথমিকের গণ্ডি পেরোনোর পর রিয়াজকে ভর্তি করা হয় বেতবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে। নানা নজরুল ইসলামের কোলে চড়ে পিইসি ও জেডিসি পাস করে রিয়াজ। সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ফুলবাড়ীয়ার আছিম শাহাবুদ্দীন ডিগ্রী কলেজে বি.এম শাখায় ভর্তি হয়েছেন রিয়াজ। নানা-নানীর প্রবল ইচ্ছা শক্তির ফলে রিয়াজের লেখাপড়া চলছে।
সরেজমিনে গেলে রিয়াজের নানী রোকেয়া বলেন, ‘রিয়াজ যেনো পড়াশোনা ও চাকরি করতে পারে তার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করবো। আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন ও দোয়া করবেন।’
রিয়াজ জানান, এসএসসি পাস করে কলেজে ভর্তি হতে পেরে তার খুব আনন্দ হচ্ছে। সেইসঙ্গে শঙ্কাও হয়। অভাবের সংসারে স্বপ্নপূরণের পথে অভাব বাধা আসে কিনা। তবে তার স্বপ্ন লেখাপড়া শেষে সরকারি চাকরি করা। চাকরি করে তার নানা-নানী ও বাবাকে সহযোগীতা করবে।
রিয়াজের নানা নজরুল ইসলাম দুঃখ করে বলেন, আমার একমাত্র ছেলে গার্মেন্টসে চাকরি করে। সেই উপার্জনের টাকায় রিয়াজসহ ৬ জনের সংসার চলে। আমি আগে ভ্যান চালাতাম। এখন বয়সের কারণে ভ্যান চালাতে পারি না।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. মকবুল হোসেন বলেন, আমাদের কলেজে ৩ ফুট ২ ইঞ্চির রিয়াজ ভর্তি হওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। তাকে কলেজ থেকে সকল ধরণের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে।