শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ডায়াবেটিসের নতুন কারণ আবিষ্কারের দাবি বাংলাদেশি বিজ্ঞানীদের

আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২২, ০৯:৫৩

ডায়াবেটিস হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে, এর মধ্যে নতুন একটি কারণ আবিষ্কার করেছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা। তারা জানিয়েছেন, গবেষণার মাধ্যমে ডায়াবেটিসের নতুন যে কারণ আবিষ্কার করা হয়েছে, সেটি হলো—আইএপি (ইন্টেস্টিনাইল অ্যালকেলাইন ফসফেটাস) কমে যাওয়া। আর আইএপি কমে যাওয়া ডায়াবেটিসের অন্যতম প্রধান কারণ। আবিষ্কারের এ বিষয় ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও চিকিত্সায় বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করেন বিজ্ঞানীরা।

গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আবিষ্কারের এ তথ্য তুলে ধরেন গবেষক দলের প্রধান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক মধু এস মালো।

গবেষকরা জানান, মানবদেহের অন্ত্রে থাকা ইন্টেস্টিনাইল অ্যালকেলাইন ফসফেটাস নামক এনজাইম ঐ টক্সিনকে ধ্বংস করে দেয়। ফলে এনজাইমের ঘাটতি হলে অন্ত্রে অতিরিক্ত টক্সিন জমা হয় এবং এই টক্সিন রক্তে ঢুকে সিস্টেমিক প্রদাহ সৃষ্টি করে। ফলে ডায়াবেটিস হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে গবেষক মধু এস মালো সাংবাদিকদের বলেন, গত পাঁচ বছরে ৩০ থেকে ৬০ বছর বয়সি ৫৭৪ জন মানুষের ওপর গবেষণা করে ডায়াবেটিসের এই নতুন কারণ সম্পর্কে জানা গেছে। গবেষণার ফলাফল ইতিমধ্যে ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল ও বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়। এরই মধ্যে অধ্যাপক মালো ল্যাবে ও বাড়িতে বসে করা যায় এমন স্টুলভিত্তিক টেস্ট কিট আবিষ্কার করেছেন, যা অদূর ভবিষ্যতে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি আছে কি না, তা শনাক্ত করতে সক্ষম। সংবাদ সম্মেলনে ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, যাদের আইএপি কমে যায়, তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা বেশি। এটি একটি যুগান্তকারী আবিষ্কার। এই আবিষ্কার থেকে বোঝা যায়, বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরাও বড় কাজ করতে সক্ষম।

গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বারডেম, ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সারা বিশ্বে বর্তমানে ৪৬ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এর মধ্যে বাংলাদেশে আক্রান্ত ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা ৮৪ লাখেরও বেশি। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি ১৯৫৬ সাল থেকে বাংলাদেশে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে।

ইত্তেফাক/ ইআ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন