শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আবারও উত্তপ্ত নিউমার্কেট এলাকা, মুহুর্মুহু ককটেল বিস্ফোরণ

আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২২, ১৭:৪৬

আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নিউমার্কেট-ঢাকা কলেজ এলাকা। থেমে থেমে শোনা গেছে ককটেল বিস্ফোরণের আওয়াজ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ। সংঘর্ষের তৃতীয় দিন বুধবার (২০ এপ্রিল) বিকালে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে আবারও বন্ধ করে দেওয়া হয় দোকানপাট ও যান চলাচল।

বুধবার বিকেল ৫টার দিকে সংঘর্ষ নিয়ে ব্যবসায়ীদের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে সড়কে নামে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা একাধিক দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। এ সময় কয়েকটি পটকা বা ককটেল ফাটানোর আওয়াজ শোনা যায়। এরপরই এই মিরপুর সড়কের এই অংশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

সোমবার ও মঙ্গলবার টানা দুইদিনের সংঘর্ষের পর বুধবার দুপুরের পর খুলে নিউমার্কেটের দোকানপাট। এদিন সকালে এই নিউমার্কেট দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দোকান খোলা হবে না। পরে পরিস্থিতি বিবেচনায় পরিবর্তন আসে তাদের সিদ্ধান্তে। দোকান মালিক সমিতির ঘোষণার পর অনেকেই দোকান খুলতে দেখা গেছে।

একইদিন সংবাদ সম্মেলেন নিউমার্কেট দোকান সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান চাই। গতকাল মঙ্গলবার সংঘর্ষে যারা হামলা চালিয়েছিলেন তারা কেউ ব্যবসায়ী নন। আমরা এ ঘটনার শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। এ ঘটনা নিয়ে কেউ যেন উসকানিমূলক কথা, বক্তব্য ও পোস্ট না দেন, এ জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন।

এদিন সকাল থেকে এই এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও নিউমার্কেট ও আশেপাশের মার্কেটগুলোতে দোকানপাট বন্ধ ছিল। এদিন সকালে দেখা যায়, গতকাল রাস্তায় দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় যে রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তার ধ্বংসাবশেষ, ইট-পাটকেল তখনও রাস্তায় পড়েছিল। সড়কে ব্যবসায়ী-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি না থাকলেও নিরাপত্তার জন্য ছিল বিপুল সংখ্যক পুলিশ। অনেক ব্যবসায়ী দোকান খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তবে দোকান মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত না আসায় তখনও খোলা হয়নি দোকানপাট।

এর আগে, প্রথম দফায় সোমবার রাত ১২টার দিকে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ‘কথা-কাটাকাটি’র জের ধরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। আড়াই ঘণ্টা পর সংঘর্ষ থামলেও দ্বিতীয় দফায় আজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টার কিছুসময় পরে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা। এ সময় পুলিশ কলেজের মূল ফটকের সামনে থেকে ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ছে বলে দাবি করেছে শিক্ষার্থী। এতে ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকা ৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে দাবি তাদের। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসের ভেতরে আগুন ধরিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

সংঘর্ষে পথচারী, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, হকারসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। নিহত হন একজন। এতে নিউমার্কেটের সব দোকানপাট বন্ধের সঙ্গে সড়কের উভয় পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সকাল থেকে দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। ঢাকা কলেজের ছাত্রদের একটি অংশ কলেজের ছাদে, আরেকটি অংশ চন্দ্রিমা মার্কেটের সামনে অবস্থান নেয়। অন্যদিকে নিউমার্কেট ছাড়াও আশপাশের অন্যান্য মার্কেটের ব্যবসায়ীরা নিউমার্কেট, রাফিন প্লাজা, বলাকা সিনেমা হল ও গাউছিয়া মার্কেটের সামনে অবস্থান নেন।

এ অবস্থায় আগামী ৫ মে থেকে ঢাকা কলেজের আবাসিক হলগুলো বন্ধের ঘোষণা দেন ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ টি এম মইনুল হোসেন। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বিকেলের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে বলা হয়েছে এক নোটিশে।

ইত্তেফাক/জেডএইচডি