শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সৈয়দপুরে ঝড়বৃষ্টির শঙ্কায় বোরো ধান কাটা শুরু

আপডেট : ০৮ মে ২০২২, ১৩:৫৯

ঝড়বৃষ্টির শঙ্কায় তড়িঘড়ি করে বোরো ধান কাটামাড়াইয়ের প্রস্তুতি নিয়েছেন কৃষকরা। ইতিমধ্যে বেশকিছু এলাকায় কাটামাড়াই শুরুও হয়েছে। এজন্য কৃষকরা ধানকাটা শ্রমিক দলকে আগাম মজুরি দিয়ে রাখছেন। যাতে দ্রুত খেতের ধান কেটে ঘরে তোলা যায়। নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে এই চিত্র মিলেছে।

উপজেলার কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর, বাঙালিপুর ও বোতলাগাড়ি ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও ধান পেকেছে। কোথাও ধান পাকতে আরো দুই সপ্তাহ লাগতে পারে। এ অবস্থায় ঝড়বৃষ্টির শঙ্কায় ধান কাটামাড়াই শুরু করেছেন। উপজেলায় বছরে দুই থেকে তিন বার ধান উত্পাদন হলেও বোরো ধানের ফলন বেশি হয়। যদিও এ ধান উৎপাদনে খরচ বেশি। সাধারণত বৈশাখ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে বোরো ধান মাড়াই শুরু করেন উপজেলার কৃষকরা। কিন্তু এ বছর বৈরী আবহাওয়ার কারণে অনেকটা শঙ্কা নিয়ে দ্রুত ধান মাড়াই করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।

কৃষকরা জানান, বীজ, সার, সেচ ও কীটনাশকের দাম বেড়েছে। শ্রমিক মজুরিও বেড়েছে কয়েক গুণ। তাই বোরো ধানে উৎপাদন খরচও বেড়েছে। অপর দিকে বৈরী আবহাওয়ায় প্রায় প্রতি দিনই আকাশ কালো করে মেঘে ছেয়ে যায়। পাকা ধান শিলাবৃষ্টি বা কালবৈশাখীর কবলে পড়লে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাবে। সেই শঙ্কায় কিছুটা আগাম ধান মাড়াই শুরু করেছেন তারা। ফলনে খুশি হলেও দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। সরকারিভাবে প্রতি মণ (৪০ কেজি) ধানের মূল্য এক হাজার ৮০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও স্থানীয় বাজারে ৮০০-৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলার বাঙালিপুরের কৃষক বিশ্বনাথ দাস বলেন, প্রতিদিনই আকাশে মেঘ জমে। এবার শিলাবৃষ্টি হলে একটা ধানও ঘরে তোলা যাবে না। তাই ধান পাকা শুরু হতেই কাটা শুরু করেছি। বাকি দিনগুলো আবহাওয়া ভালো থাকলে সব ধান ঘরে তোলা যাবে। নয়তো লোকসান গুনতে হবে। উপজেলার কামারপুকুরের কৃষক আনছার আলী বলেন, ফলন যা হয়েছে এতে আমরা খুশি। ধান ঘরে তোলা থেকে বিক্রি পর্যন্ত সব ঠিক থাকলে লাভবান হবো। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে আকাশ মেঘলা রয়েছে। শিলাবৃষ্টি হলে ব্যাপক লোকসান গুনতে হবে।

উপজেলার খাতামধুপুরের কৃষক শমসের আলী জানান, প্রতি বিঘা (৬০ শতাংশ) জমির ধান কেটে বাড়িতে আনতে কৃষি শ্রমিকের দলকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। সেই ধান মেশিনে মাড়াইয়ের জন্য ৮০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। গেল বছর এই ধান কাটা মজুরি ছিল সাড়ে ৪ হাজার টাকা আর ধান মাড়াই করা হতো ৬০০ টাকায়। জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, তাই মজুরি বেশি। জ্বালানি তেল ও মেশিনের যন্ত্রপাতির দাম বাড়ার কারণে ধান মাড়াইয়ে বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে। এ বিষয়ে সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মমতা সাহা বলেন, বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও বোরোর ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন। মাড়াই করার উপযুক্ত ধান খেতে না রেখে দ্রুত ঘরে তোলার পরামর্শ দেন তিনি।

 

ইত্তেফাক/ ইআ