গত দুই বছর করোনা ভাইরাসের প্রভাবে লিচুর ভরা মৌসুমেও পাইকারদের দেখা মেলেনি। এবার ভাইরাসের প্রভাবও নেই তাই উৎপাদনের মৌসুম যেন চাষিদের ব্যস্ত করে তুলছে। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। এবছর অনেক আগে লিচু বাজারজাত করতে পেরে চাষিদের মুখে হাসি। অনেক লিচু চাষি বেশি দামের আশায় বাগানের গাছেই লিচু রেখে দিয়েছেন। ঘূর্ণিঝড় অশনি এর কারণে বাগানের কিছু লিচু নষ্ট হলেও বেশি ফলনে চাষিদের কোন চিন্তা নেই।
উপজেলার লিচু চাষি ও উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর আবহাওয়া ছিল লিচু চাষের অণুকুলে। তাই ফলন ভালো। লিচু চাষে পুঁজি ও শ্রম লাগে কম কিন্তু আয় বেশি হয়। উপজেলার মাদার্শা, এঁওচিয়া, সোনাকানিয়া ও পুরানগড় ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে লিচুর চাষ করা হয়। এসব ইউনিয়নগুলোর বিভিন্ন পাহাড়ের পাশে অন্তত ৪০.২৫ হেক্টর জমিতে স্থানীয়, বাঁশখালীর কালীপুর জাত ও চায়ন-২, চায়না-৩ ও বোম্বাই জাতের লিচুর চাষ হয়।
তবে স্থানীয় ও কালীপুর জাতের লিচু চাষের পরিমাণ বেশি। এ জাতের লিচু গাছে জানুয়ারি মাসের শুরুতেই ফুলের দেখা মিলে আর মে মাসের শুরু থেকে গাছে লিচু পাকতে শুরু করে। অন্যদিকে চায়না ও বোম্বাই জাতের লিচু মে মাসের শেষ সময় থেকে পাকা শুরু হয়। সাতকানিয়ায় চায়না থ্রি জাতের লিচু চাষ খুবই কম। চায়না-২, চায়না-৩ ও বোম্বাই জাতের লিচু মিষ্টি ও দীর্ঘাকার হয়। ইদানীং উপজেলার লিচু চাষিদের স্থানীয় জাতের পাশাপাশি চায়না-২, চায়না-৩ ও বোম্বাই জাতের লিচু চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের সাইরতলি এলাকার লিচু বাগানের মালিক মোহাম্মদ আবছার উদ্দিন বলেন, বাড়ির পশ্চিমের পাহাড়ি এলাকায় তার দুইটি লিচু বাগান রয়েছে। এসব বাগানে কালীপুর ও চায়না-২,চায়না-৩ ও বোম্বাই জাতের অন্তত দুইশত লিচু গাছ আছে। এ বছর লিচুর ভালো ফলন হয়েছে । যা’ কয়েক বছরের তুলনায় বহুগুণ বেশী। আরো এক সপ্তাহ পরে বাগানের লিচু বিক্রি করব। এবছর বাগানে সার, কীটনাশক ও মুজুরিসহ মোট খরচ হয়েছে ৪০ হাজার টাকা। বাগানের সব লিচু ভালোভাবে বিক্রি করতে পারলে আয় হবে আড়াই লক্ষ টাকা। আবছার আরো বলেন, এ বছর পাইকারদের প্রতি হাজার লিচু বিক্রি করব ১৮ শত থেকে ২ হাজার টাকায়।
মাদার্শার লিচু বাগানের মালিক আহমদ হোসেন বলেন, স্থানীয় কিছু শ্রমিককে দিয়ে আশপাশের এলাকায় লিচু বিক্রির ব্যবস্থা করেছি। বেচা-বিক্রিও ভাল।
সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, এ বছর লিচুসহ মৌসুমি অন্যান্য ফলেরও ভালো ফলন হয়েছে। আবহাওয়া ভালো তাই লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। যথাসময়ে বাগানের লিচু বাজারে বিক্রি করতে পারলে চাষিরা প্রচুর লাভবান হবেন।