শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় দেশের সব মহানগরে চলাচলরত বেসরকারি বাসে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করলেও সব বাস হাফ ভাড়া নিতে চায় না। প্রায় সব বেসরকারি বাসেই ‘হাফ ভাড়া’ নিয়ে হেলপারদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের তর্কবিতর্ক হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসার পথে ভাড়া নিয়ে লেগেই থাকে বাগ্বিতণ্ডা। হাফ পাশ দিতে চাইলে কন্ডাক্টরের অসদাচরণ শুরু হয়। তার পরও অসহায় হয়ে এসব গাড়িতে চড়তে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। অনেক বাসেই স্টুডেন্ট দেখলে ওঠাতে চায় না। কিছু বাস ফুল ভাড়া দিতে হবে এই শর্তে বাসে ওঠায়।
শিক্ষার্থীরা বাসে উঠতে গেলে হেলপার বলেন, স্টুডেন্ট ভাড়ায় নেওয়া হবে না, ফুল ভাড়া দিয়ে যেতে হবে। প্রায়শ স্টুডেন্ট বলে বাসে ওঠাতে চায় না। হাফ ভাড়া দিতে গেলে তাকে মাঝ রাস্তায় বাস থেকে নামিয়ে দিতে চায়। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা উপযুক্ত যুক্তি দেখালেও তা মানতে নারাজ কন্ডাক্টররা। হাফ ভাড়া দিতে গেলে বলেন, এজন্যই ছাত্রদের বাসে ওঠাতে চাই না। এভাবে প্রতিদিনই শিক্ষার্থীরা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের ওপর বাসচালকদের এই নৈরাজ্য বন্ধ করতে খুব দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। হাফ পাশ আইন কার্যকর থাকলেও তা সব বাসে মানা হচ্ছে না। এর প্রতি প্রশাসনেরও কোনো তদারকি নেই। শুধু আইন প্রণয়নই নয়, সুষ্ঠু তদারকি করা জরুরি। হাফ ভাড়া না নেওয়া, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার-কটূক্তি করা, অপমান-অপদস্থ করা, নামার সময় ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেওয়া—এসব অভিযুক্ত বাসের মালিক-চালক-সহকারীর পাশাপাশি কোম্পানির এমডি, চেয়ারম্যানকে শাস্তির আওতায় আনা হোক। এজন্য গণপরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। তবেই শিক্ষার্থীদের ওপর বাসচালকদের এই নৈরাজ্য বন্ধ হবে বলে প্রত্যাশা করছি।
আরেকটি কথা, রাত ৮টার পর শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া নেওয়া হয় না। এটা সরকারের নিয়ম বলে আমরাও জানি। কিন্তু এটা নিয়েও তর্কবিতর্ক হয়। শিক্ষার্থীদের যুক্তি হলো, একজন শিক্ষার্থী সকাল, বিকাল, রাত সব সময়ই শিক্ষার্থী এবং যে কোনো সময় তাদের যাতায়াতের প্রয়োজন হতে পারে। কার্ড দেখানো সাপেক্ষে তাদের কাছ থেকে সব সময় হাফ ভাড়া নেওয়াই বাঞ্ছনীয়। এ বিষয়টির প্রতিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
হ লেখক :শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়