বাঙালি আবেগপ্রবণ জাতি। এর সাথে যুক্ত হয়েছে গুজব প্রবণতা। ইন্টারনেট যত সহজলভ্য হচ্ছে, গুজব তত বেশি ডালপালা মেলছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশ সম্ভবত ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ গুজবের সম্মুখীন হয়। পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রয়োজন মানুষের মাথা, এহেন গুজবের পরিণতি সবারই জানা। এরপর করোনাকালে নানান গুজব ছড়াতে থাকে দফায় দফায়। গুজবের ভয়াবহতা ও নেতিবাচকতা বিবেচনায় এনে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ আত্মপ্রকাশ করে রিউমার স্ক্যানার। সুমন আহমেদ, ছাকিউজ্জামান ও সাঈদ আল মাহমুদের হাত ধরে শুরু হয় গুজবের বিরুদ্ধে এক অঘোষিত লড়াই।
প্রতিটি ফ্যাক্টচেকের আগে রিউমার স্ক্যানার টিম বিভিন্ন ধাপ অনুসরণ করে থাকে। ইন্টারনেটের চলমান সকল বিষয়ে নজরদারি রাখার পর যে বিষয়টি একটু বেশিই ট্রেন্ডিংয়ে চলে আসে, মনে হয় ফ্যাক্ট চেকিংয়ের উপযোগী, তেমন বিষয় নির্বাচন করে পর্যাপ্ত অনুসন্ধানের পর বিস্তারিত ব্যাখ্যাসহ সেটি প্রকাশ করা হয় প্রতিষ্ঠানটির ফেসবুক পেজ ও ওয়েবসাইটে।
এত কিছু থাকতে গুজব নিয়ে কাজ কেনো জানতে চাইলে সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছাকিউজ্জামান বলেন, 'বাংলাদেশে গুজব ছড়ানোর ভয়াবহতা বিবেচনায় আমাদের মনে হয়েছে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম দরকার। কারণ, গুজবপ্রবণ এই দেশে গুজব হয়তো কখনও প্রতিকার করা সম্ভব নয়। তবে প্রতিরোধ অথবা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। সেক্ষেত্রে সচেতনতার বিকল্প নেই।'
শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৯০০টি ফ্যাক্ট চেকিং করেছে রিউমার স্ক্যানার টিম। এক মাসে সর্বোচ্চ ১১৯টি পর্যন্ত গুজবের আসল চিত্র তুলে ধরার রেকর্ড আছে তাদের। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ফ্যাক্টচেকিং ব্যাপারটিকে আরও সহজ করার জন্য বিভিন্ন টুলস তৈরির কাজ হাতে নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের বিশ্বাস, জিনিসগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে গুজব সংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই আরও সমৃদ্ধ করা যাবে। কাজের পুরস্কারও পেয়েছে তারা। ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাক্ট-চেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) থেকে মাত্র দুইটি বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। যার একটি রিউমার স্ক্যানার।