রোববার, ০১ অক্টোবর ২০২৩, ১৬ আশ্বিন ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

নাদির অন দ্য গো: ভ্রমণের সাথে ইতিহাসের মেলবন্ধন

ব্লগিংয়ে চমৎকার ভিডিওগ্রাফির সাথে দেশ-বিদেশের নানা স্থানের ইতিহাস ও সংস্কৃতি তুলে ধরার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভীষণ জনপ্রিয় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি ট্রাভেল ব্লগার নাদির। কম্পিউটার প্রোগ্রামার হিসেবে কাজ করছেন সেখানকার স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠানে। চলতি বছর সেরা কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে পেয়েছেন বেশ কয়েকটি অ্যাওয়ার্ড। ট্রাভেল ফিল্ম নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও তার ব্লগিংয়ের নানান গল্প নিয়ে কথা বলেছেন ইত্তেফাক 'প্রজন্ম'-এর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফরিদ উদ্দিন রনি

আপডেট : ২৯ জুন ২০২২, ১৪:৫৩

প্রজন্ম: দেশ-বিদেশে ভ্রমণের প্রতি উৎসাহী হলেন কেমন করে? ব্লগিংয়ের শুরুটা কিভাবে?
নাদির: ছোটবেলা থেকে পরিবারের সাথে দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়ানোর স্মৃতিগুলো আমার অনেক প্রিয়। খুব কম বয়স থেকেই তা আমাকে ভ্রমণে অনুপ্রাণিত করেছে। আমি প্রথমে ব্লগিং শুরু করেছিলাম কেবলমাত্র আমার নিজের জন্য। উদ্দেশ্য ছিল অভিজ্ঞতাগুলো সংরক্ষণ করে রাখা। কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে নাম করবো বা সেরকম জীবনযাপন করবো, এরকম কোনো চিন্তাই আমার মাথায় আসেনি। এমনকি প্রথম কয়েক বছর আমার ব্র্যান্ডের সাথে আমার নিজের নামও যুক্ত ছিলোনা। তবে প্রথম ভিডিও বানানোর সময় থেকেই আমি এই কাজকে অনেক ভালোবাসতে শুরু করি।

প্রজন্ম: বিভিন্ন দেশে ভ্রমণে গিয়ে নিশ্চয়ই নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন...
নাদির: আমি মনে করি এই সমস্যাগুলো মোকাবেলা করার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো কোনো একটা দেশে যাওয়ার আগে খুব ভালোভাবে রিসার্চ করে একটা সলিড প্ল্যান বানানো এবং সাথে অবশ্যই একটা ব্যাকআপ প্ল্যান রাখা, যেন কোনো কারণে যদি মূল প্ল্যান কাজ না করে তাহলে যেন দিশাহারা হতে না হয়। এই প্রক্রিয়াটি আসলে একজন পশ্চিমা পাসপোর্ট হোল্ডারের জন্য যতটা সহজ একজন বাংলাদেশি পাসপোর্ট হোল্ডারের জন্য ততটা নয়। তারপরও আমি এসব অভিজ্ঞতা নিয়ে সমৃদ্ধ হচ্ছি।

Nadir-2

প্রজন্ম: শুরুর দিকে তেমনটা সাড়া পাননি। বর্তমানে আপনার অনুসারীর সংখ্যা বাড়ছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি পুরস্কারও পেয়েছেন সেরা কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে। এ বিষয়ে বলুন।
নাদির: সত্যি বলতে সাম্প্রতিক সাফল্যগুলো আমাকে বেশ অভিভূত করেছে। এর জন্য প্রথমে আমি আমার অনুসারীদের কাছে এবং যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান আমার কাজকে প্রশংসনীয় শিল্প হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে তাঁদের কাছে অনেক কৃতজ্ঞ। আমি এ নিয়েও কৃতজ্ঞ যে, এর ফলে আমি এখন অন্য কোনো ধরণের কাজের উপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল না। তবে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করি যেন এগুলো আমার মাথা বিগড়ে না দেয় (হাসি)। যেটুকু আমার আয়ত্ত্বে আছে তাতে, যেমন ধরুন আর্টফর্ম হিসেবে ভিডিও বানানো খুবই উপভোগ করি এবং এতেই ফোকাস করার চেষ্টা করি।

প্রজন্ম: ট্রাভেল-ফিল্ম নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানতে চাই।
নাদির: পরিকল্পনা তো অনেক আছে, তবে কতটা বাস্তবায়িত করা সম্ভব হবে তা হয়তো সময়ই বলবে। আগামী কয়েক বছরের জন্য আমার লক্ষ্য হলো— এক, আমার ব্র্যান্ডের পরিধি বাড়িয়ে ট্রাভেল ফিল্ম তৈরির অন্যান্য ক্ষেত্র (niche) নিয়ে কনটেন্ট তৈরি করা যা আমি আগে করিনি। দুই, প্রোডাকশনের জন্য একটি বড় টিম গঠন করা, যেন আমি আমার কিছু দায়িত্ব অন্যদেরকে দিয়ে আমার মূল পছন্দের কাজ ভিডিও তৈরিতে মনোনিবেশ করতে পারি। তিন, আমার যে সমস্ত জায়গায় ভ্রমণের সৌভাগ্য হয়েছে সেগুলো থেকে আরও অনেক জায়গা দর্শকদের দেখানো।

প্রজন্ম: নতুন কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
নাদির: নতুনদেরকে আমি বলবো- ভাইরাল হবে এমন কন্টেন্ট তৈরিতে সফল হতে হলেও শুরুতে কিছুটা ভাগ্যের প্রয়োজন, তা সে যতই প্রতিভাবান হোক না কেন। ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির মতো একটি অনিশ্চিত আয়ের পেশার উপর পুরোপুরি নির্ভর না করে পাশাপাশি অন্য একটি নিশ্চিত আয়ের উৎস বা কাজ থাকা ভালো। আরেকটি পরামর্শ হলো, তারা যেন তাদের পছন্দের বিষয়বস্তু নিয়ে ভিডিও তৈরি করার চেষ্টা করেন, যাতে এটাকে নিজের কাছে কাজ কম, শখ বেশি মনে হয়; কারণ প্রথম সাফল্যের দেখা পেতে প্রায়ই অনেকটা ধৈর্যের প্রয়োজন হয়। যেটা সাধারণত সবার থাকে না। তাই ধৈর্য ধরে লেগে থাকতে হবে।

 

ইত্তেফাক/এসটিএম