শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ইবির হলগুলোতে নেই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র

দুর্ঘটনার আশঙ্কা

আপডেট : ০১ জুলাই ২০২২, ১০:১০

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আবাসিক হলগুলোতে নেই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র। হয় না অগ্নিনির্বাপণ ও জরুরি বহির্গমন মহড়া। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিকটবর্তী দুই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দূরত্ব যথাক্রমে ২২ ও ২৪ কিলোমিটার। এ অবস্হায় অগ্নিদুর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষক-শিক্ষার্থী।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে আটটি আবাসিক হল রয়েছে। এসব হলগুলোতে খাবারের মান ভালো না হওয়ায় অধিকাংশ কক্ষে শিক্ষার্থীরা বৈদু্যতিক হিটার ব্যবহার করে রান্না করেন। এতে শর্টসার্কিটের মাধ্যমে কিংবা অসাবধানতায় যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

সর্বশেষ গত ১৯ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেদা জিয়া হলের পুরাতন ব্লকে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের মাধ্যমে আগুন লাগে। এ সময় ছাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে রুমের বাইরে বেরিয়ে আসেন বলে হল সূত্রে জানা যায়।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক-প্রশাসনিক ভবন, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবনসহ ছোট-বড় অর্ধশতাধিক ভবন রয়েছে। এসব ভবনে অবস্হিত বিভাগগুলোতে এসি ও শিক্ষকদের আবাসিক এলাকায় হিটার, টিভি, রেফ্রিজারেটরসহ নানা বৈদ্যুতিক সামগ্রী, গ্যাস সিলিন্ডার ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। তবে এসব ভবনের হাতেগোনা তিন-চারটিতে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকলেও বাকিগুলোতে নেই অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ল্যাবে কর্মরত একাধিক কর্মকর্তা জানান, বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলোর গবেষণাগারে বিভিন্ন দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করা হয়। একটু অসতর্ক হলেই, মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এখানে প্রায় সময়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। তবে গবেষণাগারে আগুন নেভানোর কোনো ব্যবস্হা নেই। এমনকি এ বিষয়ে তাদের কোনো প্রশিক্ষণও নেই।

রাফি নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, হল কিংবা ক্লাসরুম কোথাও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নেই। দুর্ঘটনা ঘটলে উদ্ধার প্রক্রিয়া বা যন্ত্রের ব্যবহার কেমন হবে তাও জানি না। চার বছরের বেশি সময় ধরে এখানে পড়াশোনা করছি, কখনো এ ধরনের প্রশিক্ষণের বিষয়ে শুনিনি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মুন্সি শহিদ উদ্দিন মো. তারেক বলেন, ঠিক কতগুলো ভবনে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র আছে তা আমার জানা নেই। নতুন যে ১০ তলা ভবনগুলো নির্মাণাধীন সেগুলোর প্রতিটিতেই অগ্নিনির্বাপকের ব্যবস্হা থাকবে।

এ বিষয়ে প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি প্রফেসর ড. ইয়াসমিন আরা সাথী বলেন, ঈদের ছুটির পর আমরা প্রভোস্ট কাউন্সিল অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যাপারে মিটিং করে বিষয়টি প্রশাসনকে জানাব। অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র কীভাবে ব্যবহার করতে হয় সেই বিষয়েও প্রশিক্ষণের ব্যাপারে ভেবেছি।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, হল এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কতৃ‌র্পক্ষ যারা রয়েছে তারা প্রস্তাবনা বা চাহিদাপত্র উপস্হাপন করলে সে অনুযায়ী ব্যবস্হা নেওয়া হবে। বর্তমানে যেহেতু বিভিন্ন ভবন নির্মাণের কাজ চলছে, এ কাজগুলো সম্পন্ন হলে প্রতিটি ভবনে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্হা করা হবে। অগ্নি সচেতনতায় প্রশিক্ষণ বা মহড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, সময়ের চাহিদা অনুযায়ী এসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।

ইত্তেফাক/জেডএইচডি