বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

হাটহাজারীতে জমজমাট কামারপাড়া 

আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২২, ১৫:২৮

কোরবানির ঈদ এলেই ঠুং-ঠ্যং শব্দে মুখরিত হয়ে ওঠে হাটহাজারীর কামারের দোকানগুলো। হাতুড়ির পিটা পিটির শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে হাটহাজারী পৌরসভাসহ ও বিভিন্ন বাজারের কামারের দোকানগুলো। ইস্পাত গলিয়ে চলছে পশুজবাই ও মাংস কাটার ছুরি, চাপাতি, দা, বঁটিসহ নানাবিধ সরঞ্জাম তৈরি ও মেরামতের কাজ। এখন দম ফেলারও সময় নেই তাদের। 

কামারের দোকানগুলোতে এখন শুধু হাতুড়ি পেটানোর শব্দ। কেউ ভারি হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন আগুনরঙা লোহার খণ্ড। কেউ আবার পুরনো দা-ছুরিতে শাণ দিচ্ছেন। আবার কেউবা হাপর টানছেন। হাটহাজারীর বিভিন্ন কামারের দোকান ঘুরে দেখা যায় দা, ছুরি, চাকু ও বঁটির বেচাকেনা তুলনামূলকভাবে কম। দামও বেড়েছে কিছুটা। 

ঈদ যতই ঘনিয়ে আসবে ব্যস্ততা আরো বাড়বে। তবে কারিগরদের অভিযোগ, বর্তমান সময়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে পরিশ্রমের তুলনায় মজুরি অনেক কম হচ্ছে। সারাদিন আগুনের পাশে বসে থাকার ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা তৈরি হয়। তারা বলেন, সারাবছর আমাদের মোটামুটি বিক্রি হয়। তবে কোরবানির সময় বিক্রি হয় সবচেয়ে বেশি। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় লাভ আগের চেয়ে কমে গেছে। তাছাড়া এবছর অন্য বছরের তুলনায় বেচা-বিক্রিও  কম। 

উপজেলার পৌরসভা এলাকার এক কামার দোকানের মালিক উজ্জ্বল কর্মকার বলেন, কোরবানি ঈদে তারা প্রতিবছর বিভিন্ন ধরনের উপকরণ তৈরি করেন। বর্তমানে লোহা ও কয়লার দাম অনেক বেড়েছে। সে তুলনায় কামার শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। ক্রেতাও কম। 

বাজারের আরেক কর্মকার রবি জানান, সারাবছর বেচাকেনা কিছুটা কম থাকে। এবার কোরবানির আগেও বেচাবিক্রি কম। 

কাজল কর্মকার জানান এ বছর ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম, মানুষের হাতে টাকা নাই। কোরবানির পশুর জন্য দা, ছুরি, চাকু বটি কিনতে আসা কয়েকজন ব্যক্তি জানান, অধিকাংশ মানুষের হাতে তেমন টাকা নেই। তাছাড়া যন্ত্রপাতির দাম গতবারের তুলনায় বেশি।   

হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারের রবি কর্মকার, সজিৎ সেন, উজ্জ্বল কর্মকার, বাবুল, স্বপন, পলাশসহ বেশ কয়েকজন কর্মকারের সাথে কথা বলে জানা যায়, আধুনিকতার ছোঁয়ায় বর্তমানে এ কামার সম্প্রদায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়ছে। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ শিল্প আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে এই প্রত্যাশা তাদের। 

ইত্তেফাক/এআই