শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

‘প্রতিদিনই ভিক্ষা আর লাথি-ঝাঁটা খাই, আজ নিজেই রেঁধে খাচ্ছি’

আপডেট : ১০ জুলাই ২০২২, ১৪:৩৩

পবিত্র ঈদুল আজহার আনন্দ থেকে পিছিয়ে নেই অসহায় ছিন্নমূল মানুষ। এদের নেই কোন স্থায়ী ঠিকানা। পথই এদের ঘর। তাই পথেই ঈদ উদযাপন করছে ছিন্নমূল অসহায় মানুষগুলো। ঈদের এই দিনে তাদেরও ভালো কিছু রান্না করে খেতে ইচ্ছে করে। যখন সমাজের বিত্তশালীরা লাখ-লাখ টাকার গরু, হাজার-হাজার টাকার ছাগল কোরবানি দিতে ব্যস্ত। সেসময় রাস্তার পাশে এক নারী ঈদের আনন্দে কবুতর রান্নায় মেতে উঠেছেন।

তাই ঈদের দিন সকাল ১১টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদী কলেজ রোডের পাশে কর্মকারপাড়া এলাকায় রান্না করতে দেখা গেলো অসহায়, গৃহহীন ও ছিন্নমূল চল্লিশোর্ধ এক নারীকে। 

কি রান্না করছেন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘ভিক্ষা করে দু’টো কবুতর কিনেছিলাম। ঈদের দিন খাব বলে। খিচুড়ি রান্না হয়ে গেছে, এখন কবুতর রান্না করছি।’ 

তিনি যেখানে রান্না করছেন তার চারপাশেই নোংরা-আবর্জনা। রাস্তার পাশে হওয়ায় উড়ে আসছে ধূলো-বালি। এ পরিবেশের মধ্যে রান্না করছেন কেন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘পাশেই সরকারি কলের পানি রয়েছে।’ 

নাম-পরিচয় জিজ্ঞেস করলে ওই নারী বলেন, ‘নাম  শুনে কি হবে। এখন আর কোন পরিচয় নেই, রাস্তার জঞ্জাল। কোন সময় রাস্তায় আবার কোন সময় বুকিং অফিস অথবা স্টেশনে রাত কাটাই।’ 

কথায় কথায় জানা গেলো, পাকশীর এক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের আত্মীয় তিনি। এখন কেউ নেই তার। 

কীভাবে রাস্তায় এলেন প্রশ্ন করলে উত্তর না দিয়ে তিনি রেগে যান। আশেপাশের পথচারীদের কেউ কেউ বললেন, ‘মাথার গণ্ডগোল আছে।’ তবে ওই নারীর সঙ্গে কথা বলে সেরকম মনে হয়নি।

বাড়ি বাড়ি ঘুরে অনেকেই কোরবানির মাংস নিচ্ছেন, আপনি যাননি? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনই তো ভিক্ষা আর মানুষের লাথি-ঝাঁটা খাই। আজ ঈদের দিন নিজেই রেঁধে খাচ্ছি।’

ইত্তেফাক/এসজেড

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন