নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জে নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে চলছে সড়ক সংস্কার। উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের ময়দানের পাড় হতে বাহাগিলি ইউনিয়ন পর্যন্ত ২ হাজার ৩ শ’ ১৫ মিটার সড়কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে বাহাগিলি ইউনিয়নের শতাধিক বাসিন্দা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ওয়ার্ক এ্যাসিসটেন্ট হাদিউজ্জামান হাদির যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ওয়ার্ক এ্যাসিসটেন্ট বলেন, আমি নিষেধ করার পরেও ঠিকাদার সড়কে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করেছেন। এতে আমার কোনো দোষ নেই। তবে তার দাবি, ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় সড়কের কাজ বন্ধ রয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পের আওতায় বাহাগিলি ইউনিয়নের ময়দানের পাড় হতে বাহাগিলি ইউনিয়নের নান্নুর বাজার পর্যন্ত ২ হাজার ৩১৫ মিটার সড়ক নির্মাণের জন্য প্রায় ৯০ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে টেন্ডার আহবান করা হয়। টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পান ঠাকুরগাঁও জেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোকছেদুল এন্টারপ্রাইজ।
রোববার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহিন্দ্র ট্রাক্টর দিয়ে সড়কটি চাষ করে তড়িঘড়ি করে দুই দিকে এজিংয়ে পুরোনো ইট বিছিয়ে কাজ করছেন। সঙ্গে যেনতেনভাবে রোলিং করা হচ্ছে। এবং নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করে ডাব্লিউভিএম কাজ করছেন। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী সড়ক নির্মাণ কাজের সময় একজন তদারকি কর্মকর্তা থাকার নিয়ম থাকলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সড়ক নির্মাণ কাজের তদারকি কর্মকর্তা নিশাত আলীর সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, সড়কটি নির্মাণ কাজে এক নম্বর ইট দিয়ে দুই দিকে এজিং করতে হবে। তারপর বালু ফেলে পানি ছিটিয়ে সঠিকভাবে মজবুত করতে হবে। মজবুতের পর পিকেট ইটের খোয়া বিছিয়ে ডাব্লিউভিএম করতে হবে। ঠিকাদার এসব নিয়ম না মানায় ও আমার নিষেধ উপেক্ষা করে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করছে। এ কারণে আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে জানিয়ে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছি।
বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের বাসিন্দা আনছার আলী, তাইজুল, ময়নুল, রহিম উদ্দিনসহ আরও অনেকে অভিযোগ করে বলেন, ঠিকাদার নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়কের কাজ করার ফলে সড়কটির স্থায়ীত্ব হুমকির মুখে রয়েছে।
বাহাগিলি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুজাউদ্দোলা লিপটন বলেন, আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে বার বার বলার পরেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। আমি নিম্নমানের খোয়া উঠিয়ে ভালো খোয়া দিয়ে পুনরায় সড়কের কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে জানিয়েছি।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মোকছেদুল ইসলাম নিম্নমানের খোয়া আনার বিষয় স্বীকার করে বলেন, ভুল করে ৫ ট্রাক খারাপ খোয়া আনা হয়েছিলো। তবে সেগুলো ওতোটা খারাপ ছিলো না। খারাপ খোয়া ব্যবহারের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, অফিসে কথা বলেই তারপর সেগুলো ব্যবহার করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান বলেন, এ বিষয়ে ঠিকাদারকে চিঠি দিয়ে আপাতত কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।