মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ১৩ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

দৃষ্টিনন্দন ঘর

আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২২, ১৮:৪৭

বাড়ি সাজানো যা তা কথা না। একটি বাড়ি সাজানোর সময় যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হয়, তার একটা লিস্ট তৈরি করলেও সেই লিস্টটা খুব ছোট হবে না। বাড়ির রং থেকে শুরু করে আসবাব, পর্দার কাপড়, হোম ডেকর আইটেম... আরও কত কি! আর অন্দরসজ্জার প্রতিটি ক্ষেত্রের জন্য প্রতিদিন বাজারে আসছে নতুন নতুন কনসেপ্ট ও নতুন জিনিসপত্র। জেনে নিন যেভাবে গোছাবেন বাড়ির অন্দর—

নিজের একটা বাড়ি হোক, তারপর সুন্দর করে সাজাব; এমন ভাবনা নিয়ে থাকলে চলবে না। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যেখানে যে অবস্থাতেই থাকি না কেন, সে জায়গাটি পরিপাটি করে রাখলে জীবনে আসে শান্তি, যাপনে আনন্দ আর কর্মে উদ্দীপনা। সেজন্য সবসময় দামি জিনিসপত্রের দরকার হয় না, শুধু প্রয়োজন পড়ে বাড়ির প্রতিটি জিনিসের জন্য ভালোবাসা। অপ্রয়োজনীয় আর বেমানান কিছু দিয়ে সাজালে বাড়ির সৌন্দর্যে ছন্দপতন ঘটতে পারে। বাড়ির আসবাব পুরনো হতেই পারে—এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই। একে নতুন রূপ দেওয়া যায় সহজেই। ধরা যাক, কাঠের তৈরি একটি সোফা, অনেক পুরনো। এর লুক বদলে ফেলতে পারেন নতুন রঙে রাঙিয়ে। এ ক্ষেত্রে সেটিকে দেয়াল অথবা পর্দার রঙের সঙ্গে মিলিয়ে রং করাটাই উত্তম। অন্যান্য ফার্নিচারেও একই রং করা যেতে পারে। টি-টেবিলের উপর ছোট একটা কাচের শোপিস রাখা যেতে পারে। উপরে অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না রেখে, সেখানে কোনো ম্যাগাজিন অথবা ছোট কোনো বাটিতে পানি দিয়ে গোলাপ ফুল অথবা ফল রাখা যেতে পারে। নানা অনুষ্ঠানে আমরা নানা ধরনের উপহার পেয়ে থাকি। দোকানের মতো করে শোকেসে সাজিয়ে না রেখে টেবিল, বুকশেলফ বা অন্যান্য জিনিসপত্রের সঙ্গে মিলিয়ে রেখে দিলে সেগুলোও আর অপ্রয়োজনীয় মনে হবে না।

শুভেচ্ছা জানাতে অনেকেই ফুলের তোড়া নিয়ে আসেন। ফুলগুলো এক দিন পরেই শুকাতে শুরু করে। কিন্তু সেগুলো যদি প্রথম দিনই খুলে নিয়ে ফুলদানি, কাচের বোতল বা সিরামিকের গ্লাসে পানি দিয়ে রেখে দেওয়া হয়, তাহলে দেখতে সুন্দর লাগবে। নানা অনুষ্ঠানে শোপিস, পেইন্টিং ইত্যাদি উপহার হিসেবে পাওয়া যায়। সেগুলো যদি বাসার প্রয়োজন অনুসারে গুছিয়ে রাখতে পারেন, তাহলে বাড়ির সবার কাছে খুব প্রিয় হয়ে ওঠতে  পারেন সহজে।

ফ্রিজের উপরে বাড়তি জিনিসপত্র না রেখে সেখানে শুধু সকালের নাশতার কিছু জিনিসপত্র রেখে পাশে কোনো শো-পিস রাখা যেতে পারে। আমরা প্রতিদিনই কিছু না কিছু ফল বাজার থেকে কিনে আনি। সেগুলো সুন্দর করে ডাইনিং টেবিলে গুছিয়ে রাখলে ঘরের সৌন্দর্যও বাড়ে। বাসাকে সুন্দর রাখার প্রথম শর্ত হলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। একটি অপরিচ্ছন্ন বাড়িকে যত সুন্দর জিনিস দিয়ে সাজানো হোক না কেন, তাতে কাজ হবে না। কিন্তু অতি সাধারণ জিনিসপত্র দিয়েও একটি পরিচ্ছন্ন বাড়িকে শুধু পরিপাটি রাখার মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন করে তোলা যেতে পারে।

দেয়ালে যতটা সম্ভব হালকা রং ব্যবহার করা শ্রেয়। জানালা-দরজায় সাদা অথবা অন্য কোনো হালকা রঙই বাঞ্ছনীয়। আর ফার্নিচারও যদি সাদা অথবা কালো হয়, তাহলে শোপিস সহজে নজরে আসে। অনেকেরই পেইন্টিং অথবা মূল্যবান শিল্পকর্ম কেনার সামর্থ্য থাকে না। সে ক্ষেত্রে আপনার ছোট ভাই বা বোনের কিংবা নিজের ছোটবেলায় আঁকা ছবি সুন্দর করে বাঁধিয়ে দেয়ালে রাখলে সহজেই সুন্দর হয়ে ওঠতে পারে বাড়ির অভ্যন্তর। শুধু তা-ই নয়, রিকশা পেইন্টিং আমাদের অমূল্য সম্পদ, বিদেশেও রয়েছে এর অনেক চাহিদা, কিন্তু অনেক সহজেই আমরা এটা পেতে পারি। এটি বিভিন্ন বিষয়ের ওপর হয়ে থাকে। তবে প্রকৃতির ছবিকেই প্রাধান্য দিন। বাসার ধরনের ওপর নির্ভর করে এটি রাখতে পারেন। রিকশা পেইন্টিং সাধারণত টিনের পাতের উপর হয়ে থাকে। এর পেছনে কাঠের ফ্রেম তৈরি করে সহজেই দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা যায়।

আগের দিনে বাড়ির মেয়েরা কাজের ফাঁকে ফাঁকে নানা কারুশিল্পপণ্য তৈরি করতেন। হতে পারে তা চটের উপর উল দিয়ে বা কাপড়ের উপর রঙিন সুতায় তৈরি করা। সংগ্রহে জিনিসগুলো থাকলে সেগুলো ফ্রেম করে দেয়ালে ঝুলিয়ে দিতে পারেন। এ ছাড়া রয়েছে ঐতিহ্যবাহী নকশিকাঁথা। বাড়ির অভ্যন্তর সুন্দর করতেও এর ব্যবহার করতে পারেন। ড্রয়িংরুমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশে কারুকার্যময় বড় আকারের কাঁথাকে ফ্রেমবন্দি করে রাখা যেতে পারে। অথবা কোনো কর্নারে ছোট ছোট করে গ্লাস ফ্রেম করে দেয়ালেও রাখা যায়। এ ছাড়া দেয়ালের সৌন্দর্যের জন্য পুরনো পারিবারিক ফটোগ্রাফগুলো সহজেই ব্যবহার করতে পারেন। পরিবারের নতুন অথবা পছন্দের পুরনো দু’চারটি ছবি বিভিন্ন রকমের ফ্রেমে বাঁধিয়ে দেয়ালে রাখতে পারেন।

অব্যবহৃত উজ্জ্বল রঙের জামাকাপড় ফেলে না দিয়ে সেটাকে কেটে ছোট-বড় আকারে কোলাজ করে কুশন কভার তৈরি করতে পারেন।

ইত্তেফাক/এআই

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন