হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় বকেয়া বেতন, রেশন, চিকিৎসা, স্থায়ী বাসস্থান নিশ্চিত করণসহ ৫ দফা দাবিতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে চা শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের রোকনপুর বাজারে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন ইমাম ও বাওয়ানী চা বাগানের দুই হাজার শ্রমিক। পরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
শ্রমিকদের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নের ইমাম ও বাওয়ানী চা বাগানের দুই হাজার নারী-পুরুষ চা শ্রমিক কাজ করেন। দীর্ঘদিন ধরে দুটি বাগানে ম্যানেজার ছাড়াই চলছে কার্যক্রম। গত ৪ সপ্তাহ ধরে ইমাম ও বাওয়ানী চা বাগানের দুই হাজার শ্রমিকের মজুরি, রেশনের ১৮ লাখ ১৪ হাজার টাকা, ২০১৯-২০২০ সালের শ্রমিকদের এরিয়া বোনাসের ২৩ লাখ ২২ হাজার টাকা, ২০২২ সালের এরিয়া বোনাসের ৬ লাখ ১৬ হাজার টাকা পরিশোধ করছেনা মালিক পক্ষ। বিষয়টি বাংলাদেশ চা বোর্ড ও জেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানায় চা-শ্রমিকরা। কিন্তু তাতেও মেলেনি সমাধান। বাধ্য হয়ে গত (৩০ ডিসেম্বর) হতে কর্মবিরতি পালন করছে দুই বাগানের চা-শ্রমিকরা। কোনো সুরাহা না হওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে চা শ্রমিকরা। দ্রুত বকেয়া বেতন পরিশোধসহ ৫ দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা। এ সময় আধা ঘণ্টা মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল জানান, গত চার সপ্তাহ ধরে চা-শ্রমিকদের বেতন-রেশন দিচ্ছে না মালিক পক্ষ। ফলে চা শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দ্রুত বিষয়টি সমাধান না হলে বড় আকারে আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন তিনি।
ইমাম ও বাওয়ানী চা বাগানের মালিক জিকে মাইনুদ্দিন চৌধুরী মুঠোফোনে জানান, বাগানের এর আগে কখনো এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। ব্রোকাররা আমাদের টাকা না দেওয়ার কারণে বিগত ২ সপ্তাহ ধরে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না তবে আমরা তাদের রেশন দিয়ে যাচ্ছি। দ্রুত এ বিষয়টি সমাধান করা হবে। তিনি বলেন, কাজ বন্ধ রাখার ফলে চা পাতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান শাহরীয়ার বলেন, বাগানের মালিক পক্ষ চা শ্রমিকদের বেতন, এরিয়া বোনাস না দেওয়ার ফলে চা শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করে আসছেন। আমরা এ বিষয়টি সমাধানের জন্য মালিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছি। দুই চা বাগানে ২৭৫টি চা শ্রমিক পরিবারে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। তবে ইমাম ও বাওয়ানী চা বাগানের মালিক পক্ষের কাছে সরকারের খাজনা বাবদ প্রায় ৬৫ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে।