খুলনায় বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও মূলহোতাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৪ লাখ ৮৩ হাজার জাল টাকা ও টাকা তৈরির উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতার দুজন হলেন খুলনার রূপসা উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে সাইফুল জামান (২৯) ও আড়ংঘাটার সেকমতউল্লাহর ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৫২)।
সোম (৯ জানুয়ারি) ও মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) খুলনার আড়ংঘাটা ও ফুলতলা থানা এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। চক্রটি ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে আরও ২০ কোটি টাকার জাল নোট তৈরির পরিকল্পনা করছিলো।
মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব-৬ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়। ব্রিফিংয়ে র্যাব-৬’র পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মুস্তাক আহমেদ বলেন, গ্রেফতারকৃতরা জাল নোট তৈরির কারখানা বানিয়েছিল। তারা ঈদ এবং বাণিজ্য মেলাসহ বিভিন্ন উৎসবকে ঘিরে জাল টাকা তৈরি করে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতো।
তিনি জানান, সংঘবদ্ধ একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে জাল নোট তৈরি করে দেশের বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। এমন তথ্য পেয়ে র্যাব-৬’র সদর কোম্পানির একটি অভিযানিক দল ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার গোপন সংবাদের মাধ্যমে তারা জানতে পারে, জাল টাকা তৈরির চক্রের সদস্যরা নগরীর আড়ংঘাটা থানা এলাকায় অবস্থান করছে। এমন সংবাদ পেয়ে তারা দুপুর ১ টা ২০ মিনিটের দিকে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা মূল্যের নগদ ১০ লাখ টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ঐ দিন রাত আড়াইটার দিকে ফুলতলা উপজেলার দামোদর সাহাপাড়া এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব। সেখানে তাদের ভাড়া করা বাড়ি থেকে জাল নোট তৈরির কারখানা আবিস্কার করা হয়। অভিযানের সময় সেখান থেকে নগদ আরও ৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকার জাল নোট উদ্ধারসহ দুটি প্রিন্টার, একটি মেশিন, জাল নোট তৈরির ডাইস ৭টি, দুটি ফেভিকল আঠা, হেয়ার ড্রায়ার একটি, জল ছাপ সম্বলিত কাগজ ৩০০ পিস, কালার ফুলের সিল ২০টি, বিভিন্ন কালারের তরল রং ২০টি ও জাল টাকার নোট তৈরির দুই কার্টন সাদা কাগজ উদ্ধার করা হয়।
প্রেস ব্রিফিং উল্লেখ করা হয়, তারা আরও ২০ কোটি টাকার জাল টাকার নোট তৈরির পরিকল্পনা করেছিল। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাদের এজেন্টদের মাধ্যমে এই জাল নোটসমূহ সরবরাহ করা হতো। বিশেষ করে তারা ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাণিজ্য মেলাসহ বিভিন্ন শীতকালীন মেলা এবং কোরবানির সময় গরুর হাটকে টার্গেট করে এই বিপুল পরিমাণ জাল টাকা তৈরির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল।
উদ্ধারকৃত জাল টাকা, অন্যান্য আলামত ও গ্রেফতারকৃত আসামিদের থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান র্যাব-৬’র অধিনায়ক।