শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১৭ চৈত্র ১৪২৯
দৈনিক ইত্তেফাক

ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের উত্তেজনার মধ্যে ব্লিনকেনের মধ্যপ্রাচ্য সফর 

আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ০১:০৫

উত্তপ্ত আঞ্চলিক পরিবেশের মধ্যেই তিন দিনের মধ্যপ্রাচ্য সফর শুরু করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। সফরের অংশ হিসেবে রবিবার তিনি মিশরে পৌঁছান। গতকাল সোমবার তার জেরুজালেম রওয়ানা হওয়ার কথা। যেখানে নতুন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে দেশে এবং দেশের বাইরে ইসরাইলের ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধের ভবিষ্যৎ, আরব জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি এবং ফিলিস্তিনদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অচলাবস্থা মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

গত শুক্রবার এক ফিলিস্তিনি বন্দুকধারী জেরুজালেমে একটি সিনাগগে (ইহুদিদের উপাসনালয়) এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে সাতজনকে হত্যা করে। ২০০৮ সালের পর জেরুজালেমে ইসরাইলিদের ওপর সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা এটি। তার আগের দিন অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে ইসরাইলি সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে সাত ফিলিস্তিনি বন্দুকধারী এবং দুই বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে। এবার নেতানিয়াহুর জোট সরকারে চরম-জাতীয়তাবাদী দলও রয়েছে। যারা পশ্চিমতীরে ইহুদি বসতি আরো বাড়াতে চায়। নেতানিয়াহু সরকারের সঙ্গে বৈঠকে ব্লিনকেন ইসরাইলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি ওয়াশিংটনের দ্বিরাষ্ট্র নীতিতে অটল থাকার কথা পুনরায় ব্যক্ত করবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে ইসরাইল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনা অদূর ভবিষ্যতে শুরু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা এখনো নেই বলেই মত যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক করতে ব্লিনকেন রামাল্লাহ যাবেন বলেও জানা গেছে। ব্লিনকেনের এই সফরে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা। ১১ মাসের এই যুদ্ধে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর কাছ থেকে বড় আকারে সামরিক সহায়তা পেয়েছে। এখন ব্লিনকেন ইসরাইলের কাছেও রাশিয়ার ড্রোন ভূপাতিত করার প্রযুক্তি চাইবেন। ইসরাইলের আঞ্চলিক শত্রু ইরান রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহ করেছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে খানিকটা নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে ইসরাইল। তারা রাশিয়ার আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছে। একই সঙ্গে সিরিয়ার বিষয়ে মস্কোর সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে চাইছে।

ইসরাইল সরকার রাশিয়ায় বসবাস করা ইহুদিদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে চায়। যে কারণ ?তারা ইউক্রেনে মানবিক সহায়তা এবং সামরিক সুরক্ষা সরঞ্জাম প্রদান সীমিত রেখেছে।

  • সফরের দিকে নজর ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের 

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন এমন সময়ে এই অঞ্চলে সফরে গেলেন যার কদিন আগেই ফিলিস্তিনদের ওপর ভয়াবহ তাণ্ডব চালায় দখলদার বাহিনী। দখলকৃত পশ্চিম তীরের একটি শরণার্থী শিবিরে ঢুকে ১০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে তারা। এ নিয়ে মুসলিম দেশগুলোর প্রতিবাদের মধ্যেই অঞ্চলটিতে গেলেন তিনি। ফলে ফিলিস্তিন ও ইসরাইল উভয় দেশই তার এই সফরের দিকে নজর রাখছে। গত মাসে নেতানিয়াহু ফের ইসরাইলের ক্ষমতায় আসার পর এটিই হবে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তার প্রথম সফর।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, সফরে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে আলাপের মূল বিষয়বস্তু হবে এই অঞ্চলে উত্তেজনার পারদ কমানো।

ইত্তেফাক/ইআ