রোববার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Ittefaq

বরাদ্দ ছিল ৬ লাখ, কাজ হয়েছে ১ লাখের

আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:১৮

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে লালুয়াপাড়ায় গ্রামীণ সড়ক সংস্কারে সীমাহীন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ছয় লাখ টাকার বারাদ্দ থাকলেও মাত্র ১ লাখ টাকা মাটি ফেলে নামমাত্র সংস্কার করা হয়েছে। বিশেষ করে নতুন মাটি ফেলার পরে সড়ক সরু হয়ে গেছে। এছাড়া মাটি সমান না করায় চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

(১ ফেব্রুয়ারি) বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, লাজিমের মোড় হতে মাদ্রাসার জমি পর্যন্ত সড়কটি দৈর্ঘ্য আধা কিলোমিটারেরও কম হবে। সড়কটির শেষের দু‘পাশের গর্তে ১ থেকে দেড় ফুটের মতো করে মাটি ফেলা হয়েছে। আর উঁচু জায়গাতে আধা ফুটেরও কম মাটি পড়েছে। সরু সড়ক দিয়ে ১টি মোটরসাইকেল ও ১টি বাইসাইকেল এক সঙ্গে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। মাটি সমান না করায় হেঁটে চলাও কষ্টের। 

সিরাজগঞ্জ ৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে প্রথম পর্যায়ের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা-গম) ১০ মেট্রিক টন বরাদ্দ দিয়েছেন লাজিমের মোড় হতে লালুয়া পাড়ার মাদ্রাসার জমি পর্যন্ত সড়ক সংস্কার কাজের জন্য।

সড়স সংস্কারে সীমাহীন অনিয়মের অভিযোগ। ছবি: ইত্তেফাক

সড়ক সংস্কার প্রকল্প কমিটির সভাপতি, ২ নম্বর লালুয়ামঝিরা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আছালত হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‌১০ টন গমের দাম ৬ লাখ টাকা। কিন্তু আমাকে দেওয়া হয়েছে দেড় লাখ টাকা। কাজ হয়েছে মিলে ১ লাখের। বরাদ্দ আসে ঠিকই। বেশিরভাগ টাকা অফিস কেটে রাখে।

লালুয়াপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ (৫৫) বলেন, ভেবেছিলাম সড়কে বেশি করে মাটি ফেলে আগের চেয়ে প্রশস্ত করা হবে। তারপর মাটি সমান করে চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হবে। এখন সাইকেল চালিয়ে যাওয়া যায় না। এটেল মাটির উঁচু নিচু সড়ক দিয়ে হেঁটে চলাও কঠিন হয়ে পড়েছে।

লালুয়াপাড়ার সবিতা খাতুন নামের এক গৃহবধূ বলেন, আগের সড়ক প্রশস্ত ও সমান ছিল। যাতায়াতের কোনো অসুবিধা হতো না। কিন্তু নতুন করে মাটি ফেলার পরে সড়কটি সরু হয়ে গেছে। লোকজন চলাচলের সময় ভ্যান ঢুকে পড়লে সড়কের ঢালে দাড়িয়ে ভ্যান যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হয়।

লালুয়াপাড়ার ছাইদুল ইসলাম বলেন, ড্রাম ট্রাকে করে সামান্য কয়েক গাড়ি মাটি ফেলা হয়েছে সড়কে। বৃষ্টি হলেই বেশিরভাগ মাটি ধসে যাবে।

লালুয়াপাড়ার জহির আলী ফকির (৭০) বলেন, লালুয়া পাড়ায় ৫ শতাধিক মানুষের বসবাস। বাড়ি থেকে বেড় হয়ে যাওয়ার কোনো রাস্তা ছিলো না আমাদের। বন্যার সময় নৌকায় পার হতাম। শুষ্ক মৌসুমে জমির আইল দিয়ে চলাচল করতে হয়েছে। উপায় না পেয়ে নিজেদের জমির জায়গা ছেড়ে দিয়ে নিজেরাই মাটি কেটে সড়ক নির্মাণ করেছিলাম ১৩ বছর আগে। তারপর তিন বছর সামান্য করে মাটি ফেলা হয়েছে। মরার আগে বুঝি ভালো সড়ক দেখে যেতে পারবো না!   
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী বলেন, প্রয়োজনে ড্রেসিং করে মাটি সমান করে দেওয়া হবে।
 
সিরাজগঞ্জ ৩ (তাড়াশ, রায়গঞ্জ ও সলঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, সড়কের কাজের অসঙ্গতির বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী ও  সড়ক সংস্কার প্রকল্পের সভাপতি আছালত হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন। এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই।  

ইত্তেফাক/পিও
 
unib